পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

“বাবা” রামদেব, সুপ্রিম কোর্ট, সরকার এবং ক্ষমতার লম্বা হাত

  • 05 April, 2024
  • 5 Comment(s)
  • 1082 view(s)
  • লিখেছেন : জয়ন্ত ভট্টাচার্য
বেশ কয়েক বছর আগে থেকে রামদেবের ক্ষমতার সর্বোচ্চ কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগের শুরু। এ সম্পর্কের গভীরতা এবং দৃঢ়তা অনুধাবন করতে পারলে আমাদের মতো প্রায় সমস্ত সাধারণ মানুষের চোখ কপালে ওঠা অস্বাভাবিক কোন ঘটনা হবেনা। ২০১৬ সালের পরে হরিয়ানা সরকার আরাবল্লি পর্বতমালার যে এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে পড়েনা সে অংশ নিরঙ্কুশভাবে তুলে দিয়েছে “বাবা”র হাতে। কিন্তু এবার, বগা ফান্দে পড়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে, ধমক খাওয়ার ফল কী হয়, তার দিকে এবার সারা দেশ তাকিয়ে থাকবে।

রামদেব( বাবা)কে নিয়ে পাঠকদের স্মৃতিতে আশা করি দুটি ঘটনার কথা সহজেই আবার জেগে উঠবে। দুটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে স্বয়ংসিদ্ধ যোগগুরু রামদেব। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল, ২০২৪) সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিদ্বয় – বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসুদ্দিন আমানুল্লার ডিভিসন বেঞ্চ – “যোগগুরু” রামদেব বাবার ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ-এর তরফে ব্যবহার করা ওষুধের বিজ্ঞাপন নিয়ে নজিরবিহীনভাবে তীব্রতম ভাষায় ভৎর্সনা করেছেন। আবার তাঁদের ভৎর্সনার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারও আছে। ৩ মাসের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কেন্দ্রীয় সরকারও এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট দ্বারা ভৎর্সিত হল। রামদেব এবং পতঞ্জলি সংস্থার উচ্চ আধিকারিক আচার্য বালকৃষ্ণকে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছেন, এরা অত্যন্ত ঔদ্ধত্যের সাথে সর্বোচ্চ কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে। অধিকন্তু, পতঞ্জলির তথাকথিত ভেষজ ওষুধের মাহাত্ম্য (যা এদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আধুনিক মেডিসিনের চেয়েও বেশি কার্যকর) নিয়ে যে বিজ্ঞাপন তাকে “প্রতারণপূর্ণ”, “বিভ্রান্তিকর” ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করেও তিরস্কার করা হয়েছে। এরকম  তিরস্কারের পরে পতঞ্জলির তরফ থেকে ভারতের সলিসিটর ক্ষমাপ্রার্থনা করেন সর্বোচ্চ আদালতে এবং জানান – “যা ঘটেছে সেটা অনভিপ্রেত এবং এরকম ঘটা উচিত হয়নি।”

অন্যসমস্ত সংবাদপত্র বাদ দিয়ে ভারতের আইনজ্ঞদের মুখপত্র বার অ্যান্ড বেঞ্চ-এ প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামটি তুলে দিই

“Absolute defiance, humbug, perjury:” Supreme Court slams Patanjali over its apology affidavit in misleading ads case – Patanjali Ayurved and its Managing Director Acharya Balkrishna had on March 21 tendered an unconditional apology before the Supreme Court over advertisements targeting modern medicine.” http://(https://www.barandbench.com/news/supreme-court-slams-patanjali-over-its-apology-affidavit-misleading-ads-case)

অত্যন্ত দাম্ভিকতা এবং স্পর্ধা নিয়ে আধুনিক মেডিসিনের কুৎসা-সংবলিত পতঞ্জলির বিজ্ঞাপনের বিচারে যাবার আগে আমরা “বাবা”র অলৌকিক ক্ষমতার দৃষ্টান্ত হিসবে ঘটনাদুটি একবার পেছন ফিরে দেখি। ঘটনা ১ – দিল্লির রামলীলা ময়দানে আন্না হাজারের দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে (যার অন্যতম ফলিত পরিণতি আজকের আম আদমি পার্টি) যোগ দিয়েছিলেন। আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করার এবং ভাঙ্গার জন্য ওখানে দিল্লি পুলিশের অভিযান চলে। ১১ জুন, ২০১১, সমস্ত সর্বভারতীয় এবং প্রায় সমস্ত আঞ্চলিক সংবাদপত্রের অন্যতম খবর ছিল – সালোয়ার কামিজ এবং মাথায় দোপাট্টা বেঁধে একজন মহিলার বেশে পালাতে গিয়ে এই যোগী ভদ্রলোক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। সেসময় সংবাদের শিরোনাম এরকমও ছিল, “রামদেব’স ডেয়ারিং এসকেপ বিড ওয়ারিং সালওয়ার-কুর্তা, দুপাট্টা”। (কভার ছবি)

ঘটনা ২ – বাবুল-সুপ্রিয়র রাজনীতিতে আসার প্রবল তাগিদ জেগেছিল। তাঁর বয়ানে (সংবাদপত্রে প্রকাশিত) আমরা জানতে পারি, প্লেনে তাঁর সঙ্গেই ছিলেন “বাবা”। “বাবা”কে তাঁর ইচ্ছের কথা বলতেই তিনি শাসক রাজনৈতিক দলের (তখনও শাসক হয়ে ওঠেনি) এক শীর্ষ কর্তার সঙ্গে বাবুলের কথা বলিয়ে দেন। পরবর্তীতে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে আসানসোল কেন্দ্রে দোলা সেনকে হারিয়ে বাবুল “মুঝে বাবুল চাহিয়ে” স্বপ্ন সফল করে তোলেন।

 

২০২২ সালের আগস্টে ভারতীয় চিকিৎসকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন তথা আইএমএ-র তরফে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়। বিষয় ছিল, পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ-এর একটি বিজ্ঞাপন যেখানে বলা হয়েছিল – “অ্যালোপ্যাথি দিয়ে চড়িয়ে পড়া ভুল ধারণাঃ আপনি নিজেকে এবং দেশকে বাঁচান ফার্মা এবং মেডিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির প্রচার করা ভুল ধারণার হাত থেকে।” এরপরে জল আরও গড়ায়। ২০ নভেম্বর, ২০২৩-এ সুপ্রিম কোর্ট পতঞ্জলি-কে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন যে হয় এ ধরনের বিজ্ঞাপন বন্ধ করুন, নতুবা আমরা ১ কোটি টাকা জরিমানা করব। করোনাকালে পতঞ্জলির তরফে “সম্পূর্ণ পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ামুক্ত” “করোনা কিট”-এর বিপুল প্রচার চালানো হয়।

এরকম করোনা-হন্তা আরেকটি ওষুধের নাম ছিল করোনিল। এর ক্ষেত্রে দাবী, কোভিড আক্রান্তদের সম্পূর্ণত সারিয়ে তুলতে পারে। মনে রাখতে হবে, কোভিডকালের শুরুর দিকে কোন ওষুধই চিকিৎসকদের হাতে ছিলনা। এজন্য হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন থেকে শুরু করে সমস্ত রকমের জড়িবুটি ব্যবহার করেছে অসহায় সাধারণ মানুষ। থালাও বাজিয়েছে। বিজ্ঞানের ফাঁক গলে ঢুকে পড়েছে বিশ্বাস, ধর্মীয় সংস্কার এবং খড়কুটোর মতো যাহোক কিছু আঁকড়ে ধরা। আমরা তো জানিই বর্তমান সময়ে বিজ্ঞানর্চার চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে পৌরাণিক বিশ্বাস এবং সিউডোসায়ান্স। নেচার, সায়ান্স, ল্যান্সেট, নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এর পৃথিবীর একেবারে প্রথমসারির বিজ্ঞান এবং  মেডিসিনের জার্নালে এ বিষয়ে বিশ্বজুড়ে বারংবার সতর্কবাণী উচ্চারণ করা হচ্ছে। সম্পাদকীয় সহ দীর্ঘ প্রতিবেদনও লেখা হচ্ছে। তবুও যুক্তির জায়গা দখল করছে ব্যক্তি ও অতীতের ওপরে সুগভীর বিশ্বাস। সামাজিক এবং অ্যাকাডেমিক জগতে এর চাষ চলছে রাষ্ট্রের সবল সহযোগিতায়। ইতিহাসের স্থান নিচ্ছে পৌরাণিক অতিকথা। বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রের চাইতে বহুগুণ বেশি তৈরি হচ্ছে মন্দির এবং “নির্মিত” তীর্থস্থান।

“বাবা”-কাহিনি এখানেই শেষ নয়। বেশ কয়েক বছর আগে থেকে রামদেবের ক্ষমতার সর্বোচ্চ কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগের শুরু। এ সম্পর্কের গভীরতা এবং দৃঢ়তা অনুধাবন করতে পারলে আমাদের মতো প্রায় সমস্ত সাধারণ মানুষের চোখ কপালে ওঠা অস্বাভাবিক কোন ঘটনা হবেনা। ২০১৬ সালের পরে হরিয়ানা সরকার আরাবল্লি পর্বতমালার যে এক-তৃতীয়াংশ সংরক্ষিত অরণ্যের মধ্যে পড়েনা সে অংশ নিরঙ্কুশভাবে তুলে দিয়েছে “বাবা”র হাতে। সেখানে যথেচ্ছ প্রকৃতি নিধন করে ফ্যাক্টরি তৈরি হচ্ছে, এমনকি রিয়্যাল এস্টেটের ব্যবসাও ভালোভাবে চলছে। “বাবা”র সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ১৪টি বিভিন্ন নামের কোম্পানি এবং দুটি ট্রাস্ট রয়েছে। এই ১৪টি কোম্পানির মধ্যে অন্তত ৪টি কোম্পানি এবং ১টি ট্রাস্ট এ জমি হস্তান্তর করছে বিভিন্ন কর্পোরেশনের কাছে যারা রিয়্যাল এস্টেটের ব্যবসা করে। এ ঘটনাগুলো ঘটছে মঙ্গর অঞ্চলে যেখানে প্যালিওলিথিক যুগের নিদর্শন আছে। ২০২১ সালে রামদেব পাম তেল তৈরির উদ্যোগ নেবার কথা ঘোষণা করেন। বিনিয়োগের পরিমাণ নেহাত ফেলনা নয় – মাত্র ১১,০০০ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে নেচার-এ এবং ২০১৪ সালে ইকোহেলথ জার্নাল-এ গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল পাম তেল তৈরির ক্ষতিকারক দিক নিয়ে। পাম গাছের বাড়বৃদ্ধি “বায়োডাইভার্সিটি” নষ্ট করে দেয়। একাধিক গবেষণা সন্দেহাতীতভাবে দেখিয়েছে – জমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন এসেছে তার ক্ষমতা রয়েছে রোগের ডাইমিক্সকে প্রত্যক্ষত বা অপ্রত্যক্ষত বদলে দেবার।

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ সংস্থার মতামত – “  Palm oil production increased 15-fold between 1980 and 2014 and will likely increase further.   Oil palm expansion could affect 54% of threatened mammals and 64% of threatened birds globally.   Because other oil crops have lower yields than oil palm, replacing it is not a solution.   To reduce its impacts on biodiversity, palm oil needs to be produced more sustainably by avoiding deforestation and cutting non-food palm oil use.” (https://www.iucn.org/resources/issues-brief/palm-oil-and-biodiversity)

জমির প্রসারণের ফলে বেশি করে অণুজীবেরা মানুষের বসবাসের অঞ্চলে প্রবেশ করবে। জমি ব্যবহারের পরিবর্তনের ফলে জনসমষ্টির বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটছে, চরিত্রের পরিবর্তন হচ্ছে, ইমিউনিটির প্রতিক্রিয়া এবং পারস্পরিক সংযোগের অর্থাৎ রোগের বাহক ভেক্টর এবং মানুষের এবং রোগের ধারকদের ধরণ বদলে যাচ্ছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, পাম তেলের গাছ যত বেশি হবে লাগানো তত বেশি করে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে যে বৃক্ষরাজি জমির ওপরে চন্দ্রাতপ (canopy) তৈরি করে জমির নিজস্বতা এবং ফলদায়ী চরিত্র ধরে রেখেছে, সে চরিত্র পূর্ণত নষ্ট হয়ে যাবে – polyculture-এর জায়গা নেবে কৃষিতে monoculture।

নীচের ডায়াগ্রাম থেকে বোঝা যাবে কীভাবে জনজাতির মানুষদের মতো জমির অন্তরাত্মার সাথে জড়িয়ে থাকা কৃষকের ভালোবাসা-উপজাত উৎপাদন সর্বোচ্চ মুনাফাদায়ী “মনোকালচার” কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে – প্রায় সমগ্র বিশ্বব্যাপী এবং ভারতে “বাবা” রামদেবদের ঐশ্বরিক আশীর্বাদে।

 

আরও বলার, এখানে খুব সহজ প্রশ্ন উঠবে – জমির ব্যবহারে পরিবর্তন (ল্যান্ড ইউজ চেঞ্জ) কারা করলো? কি উদ্দেশ্যে? যে উদ্দেশ্যে (খনিজ এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের সম্পদের জন্য) ব্রাজিলের রেন ফরেস্টের ২৫% পুড়িয়ে দেওয়া হয় সে উদ্দেশ্যে? শিল্প বিপ্লব পরবর্তীতে, বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, এবং ক্রমাগত নিওলিবারাল অর্থনীতির প্রায়-একমাত্র হয়ে ওঠার পরে, প্রকৃতির উপরে প্রভুত্ব এবং পুঁজির প্রয়োজনে যথেচ্ছ ব্যবহারের বিষময় ফল আমরা ভোগ করছি।

নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এ প্রকাশিত (এপ্রিল ২, ২০২০) প্রবন্ধে (“Escaping Pandora’s Box – Another Novel Coronavirus”) বলা হচ্ছে – “আমাদের অবশ্যই এটা বুঝতে হবে যে ৭.৮ বিলিয়ন (৭৮০ কোটি) মানুষের থিকথিকে ভিড়ে ভরা পৃথিবীতে বিভিন্ন ঘটনার একসাথে ঘটা – যেমন, মানুষের চরিত্রের পরিবর্তন, পরিবেশের পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্যের অপ্রতুল মেকানিজম – বিভিন্ন অস্পষ্টভাবে লুকিয়ে থাকা প্রাণী জগতের ভাইরাসকে মানুষের দুর্দৈব করে তুলেছে।” মানুষের চরিত্রের পরিবর্তনের মাঝে মুনাফার উদগ্র আকাঙ্খা এবং আধিপত্যের দুর্মর বাসনাও অন্তর্ভুক্ত হবে। ২০১৯ সালে (১১ জুন, ২০১৯) নেচার-এ প্রকাশিত রিভিউ আর্টিকলের শিরোনাম ছিল “Emerging human infectious diseases and the links to global food production”। এখানে ২০২০ সালের মধ্যে পৃথিবীর অনুমিত ১১০০ কোটি মানুষের জন্য জুনোটিক রোগ কি কাণ্ড ঘটাতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক বার্তা রয়েছে।

২০২২ সালে পরিবর্তিত নতুন “ফরেস্ট (কনজার্ভেশন) রুলস, ২০২২”-এ বলা হয়েছে যে, অরণ্য অঞ্চলের অধিবাসীদের আগাম অনুমতি ছাড়াই যারা প্রাইভেট পুঁজি বিনিয়োগ করবে তারা নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদন করতে পারতে পারবে। নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর মতো প্রভাবশালী সংবাদপত্রে ভারতে ফরেস্ট রক্ষার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশিত হয়েছিল “রিস্কিং দেয়ার লাইভস, ফর লিটল পে, টু গার্ড ইন্ডিয়া’জ ফরেস্টস” (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২)। এদেরকে ১১ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগকারীর কাছে আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত করা কি খুব শক্ত বিষয়?

আমরা পুরনো কিছু কথা স্মরণ করি। রামদেব “বাবা” একটি টিভি চ্যানেল চালাতেন আস্থা নামে – কোটি কোটি মানুষকে যোগ শিক্ষা দিতে। প্রায় দু’দশক ধরে চলেছে এ চ্যানেল। ফলে দৃশ্য-শব্দ-উপদেশের সমাহারে দীর্ঘদিন ধরে এক সামাজিক মানসিকতা নির্মাণ করা হয়েছে। অন্য একটি বিষয়ও এখানে প্রাসঙ্গিক। আমার চেম্বারে, রাস্তাঘাটে কিংবা পরিচিত-অপরিচিত দুহাতের আঙ্গুল ঘষার একটি বিশেষ পদ্ধতি কোভিডেড় আগে অবধি চোখে পড়ার মতো প্রকটভাবে চালু ছিল। এমন লৌকিক ধারণার জন্ম হয়েছিল যে, এতে নাকি রক্তচাপ কমে এবং হার্ট ভালো থাকে। অর্থাৎ আধুনিক চিকিৎসার মাঝে লৌকিক ধারণা জাঁকিয়ে বসেছিল। সমাজতত্ত্বের ভাষায় একে এক ধরনের irruption বলা যায়।

তাহলে ব্যাপারাটা হল, রামদেব সুপ্রিম কোর্টের কাছে তীব্রভাবে তিরস্কৃত হলেও “বাবা”ই বটে। সর্বক্ষমতাসম্পন্ন, সর্বত্র বিচরণকারী, এবং হাইড্রার মতো অসংখ্য শুঁড় বিশিষ্ট। একটি কাটলে আরেকটি গজাবে। এজন্য সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কার কার্যত হাইড্রার ওপরে সামান্য আঁচড়। আবার অন্য পথে গজিয়ে উঠবে – “রণে বনে জলে জঙ্গলে যেখানেই বিপদে পড়িবে আমাকে স্মরণ করিও।”

5 Comments

Pravin Nahar

05 April, 2024

Thanks Jayanta for highlighting this. Its so unfortunate that this has been allowed to go on for such a long time. I know several of my relatives and friends (of course, non-medical) who have stopped their regular medications for diabetes and hypertension influenced by the Baba's antiques. Some long... time ago I was his admirer when he popularised yoga in his TV channel without any apparent commercial benefit - of course not knowing his long term plans !!

Debabrata Dutta

05 April, 2024

খুব ভালো বন্ধু। বেটাদের কোমরে দড়ি পরিয়ে সবার সামনে দিয়ে হাঁটিয়ে তিহারে পাঠানো উচিত।

Ruma Das

05 April, 2024

Osadharon lekhoni sob kichhutei uni sobAr opore Dr der uni failed proved k Korchhen in all time .jonogon stupid noi bujhruki ekdin proved hobei

Sujoy Chanda

05 April, 2024

বর্তমান সরকারের প্রশ্রয়েই এই জালিয়াত বাবার এত বাড়বাড়ন্ত। এই সরকার অবেজ্ঞানিক চিন্তভাবনাকে বেশি প্রশ্রয় দেয়।এ দেশে ঠকার মত পাবলিকের অভাব কোন দিনও কম ছিল না।ওরা হাড়ি কাঠে গলা দেবার জন্য ছটফট করছে। যতই ওদের পকেট সাফ করবেন ততই ওরা পরম প্রশান্তি খুজে পাবে।

Sujoy Chanda

06 April, 2024

মোদির প্রশ্রয়তেই এই বুজরুক বাবার এত বাড় বাড়ন্ত।

Post Comment