এত দিন অবধি কেতাব আলি শরীরে তেমন কোনও সমস্যা টের পায়নি। তে-রাস্তার ধারে তার মুদি দোকান ভালো চলেছে। দুই মেয়ের ভিতর ফরজানার বিয়ে নিয়ে কিছু দিন উদ্বেগ ছিল। ফরজানা গ্রাজুয়েট না হয়ে বিয়ে করবে না। শেষ পর্যন্ত সে ঝামেলাও মিটে গেছে। বিয়ে পরীক্ষা শেষ হওয়া মাত্র ফরজানার পাত্র পাওয়া গেছে আর ফরজানা তাতে আর আপত্তি করেনি। ফলে কেতাব আলি আর তার বউ সালমা এখন অনেক ঝাড়া হাত-পা। চাপ নেই, দেনা-বাকি নেই।
বাড়ি থেকে আমার স্কুল খুব বেশি দূরে নয়, সাইকেল চড়ে মাত্র মিনিট দশেকের পথ। অথচ আজ স্কুল যাব বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দশ মিনিট নয়, আরও আরও অনেক মিনিট পেরিয়ে আমি যে কোথায় চলেছি তা আমার নিজেরই অজানা। আমি দেখছি একটা প্রশ্বস্ত পাকা সড়ক। সেই সড়কে হরেক কিসিমের প্রচুর বাইক, মোটরগাড়ি, বাস, লরি। দু-পাশে সারি সারি গাছ নয়, তার জায়গায় সব একই গড়নের বহুতল আকাশ ঢেকে দাঁড়িয়ে আছে।
হাসপাতাল থেকে ফেরামাত্র মিনি চোখের ইশারায় আমাকে ডাকে। অভিজিৎকে ও ভয় পায়, তাই এড়িয়ে চলে। আমি ঘরে ঢুকতেই তোশকের নীচ থেকে একটা ড্রয়িং খাতা বার করে, আমার হাতে দেয়। পাতা উলটাতে থাকি, এপাতা থেকে ওপাতা, আবার প্রথম পাতা…। মহাবিশ্বের মহাকাশে শুনতে পাই অদ্ভুত সব সুর আর অসুরের খেলা। মধুকৈটভের লড়াই।
এই চরে এত রাতে “ মারা গেল! মারা গেল!”, বলে কে চিল্লায়? দু’বার চিল্লেই চিল্লানোটা হাওয়া হয়ে যায়। এখন চর আবার চুপ। মকদুম মৌলভী খানিক তাজ্জব বনে যায়। এখানে কারো কিছু হলে “ আগগে মা’গে মইরা গ্যাল্লো রে!” বলেই বিলাপের রীতি। ‘বিলাপ’ শব্দটাও এখানে মকদুম ছাড়া কেউ জানে বলে মকদুমের মনে হয় না।
লালকেল্লা, তাজমহল, নিজামউদ্দিন আউলিয়া আজও সংঘের তথাকথিত সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার প্রতিবন্ধক। তাই আজ সুলতানি ও মুঘল যুগকে মুছে ফেলার এত তৎপরতা। কৌশলটা হল ব্রিটিশ বিরোধী গৌরবময় স্বাধীনতার লড়াইটাকে মুছে ফেলে, মানুষকে সংশয়াকুল করে তোলা এবং এক প্রাচীন, কষ্টকল্পিত সনাতন ভারতের ছবি প্রতিষ্ঠা করা। কাজটা কঠিন কিন্তু সংঘ প্রকল্পিত হিন্দু রাষ্ট্রের জন্য জরুরি বটে।
এক কথায় যেসব ইস্যু কে অবলম্বন করে বিজেপি মানুষের মধ্যে জনভিত্তি গড়তে চেয়েছিল, সেগুলো দ্রুত কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এ অবস্থায় বিজেপিকে অনেক বেশি হঠকারী ভূমিকায় নামতে হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনটাকেই নিজের পায়ের তলায় নিয়ে এসো।
এবারের সহমনের গল্প বিভাগে ৩টি অণু গল্প থাকলো। সুদূরের পিয়াসী, মোহরের চিঠি ও মানুষ ভাসছে এই ৩টি অণু গল্প নিয়ে আজ সহমনের গল্প সাজালেন অয়ন মুখোপাধ্যায়।
সরকার জিএসটির এই সংস্কারকে একটি ‘বুস্টার শট’ হিসেবে দেখালেও, অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞরা এর কার্যকারিতা ও বাস্তবায়ন নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। জিএসটি ২.০-এর সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো এর আর্থিক প্রভাব। সরকারের অনুমান অনুযায়ী, এই সংস্কারের ফলে বার্ষিক ৪৮,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে। তবে, বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলো আরও বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছে, যা সম্মিলিতভাবে ১.৫ -২ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
একটা তীক্ষ্ণ যান্ত্রিক শব্দে ঘুম ভেঙে গেল অনুপমের। চোখ খুলে চারপাশটা দেখে বুঝে নিতে খানিকটা সময় লাগল তার। দেওয়াল ঘড়িতে তখন পাঁচটা পঁয়তাল্লিশ। প্রতিদিনই সকাল ছটায় এলার্ম দেওয়া থাকে। এলার্ম বাজতে এখনো পনেরো মিনিট বাকি। খানিকটা বিরক্তই হলেন তিনি। যে শব্দে তার ঘুম ভেঙেছিল সে শব্দটা এখন আর শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না যে এত জোরে কানের কাছে কিসের শব্দ হল! যাই হোক আর আড়ামোড়া ভেঙে বিছানায় উঠে বসে মোবাইলটা নিয়ে এলার্ম অফ করে দিলেন।
২৫-এর ৫ই অগাস্ট রাত পোহাতেই ২৫ টি গবেষণা গ্রন্থকে নিষিদ্ধকরণের পরোয়ানা জারি হল তামাম কাশ্মীর জুড়ে। অরুন্ধতী রায়ের আজাদি সম্বলিত সে তালিকায় সিংহভাগই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রাবন্ধিক, ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক ও অধ্যাপকের লেখা বইয়ের নাম।
২৫-এর ৫ই অগাস্ট রাত পোহাতেই ২৫ টি গবেষণা গ্রন্থকে নিষিদ্ধকরণের পরোয়ানা জারি হল তামাম কাশ্মীর জুড়ে। অরুন্ধতী রায়ের আজাদি সম্বলিত সে তালিকায় সিংহভাগই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রাবন্ধিক, ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক ও অধ্যাপকের লেখা বইয়ের নাম।
একটা তীক্ষ্ণ যান্ত্রিক শব্দে ঘুম ভেঙে গেল অনুপমের। চোখ খুলে চারপাশটা দেখে বুঝে নিতে খানিকটা সময় লাগল তার। দেওয়াল ঘড়িতে তখন পাঁচটা পঁয়তাল্লিশ। প্রতিদিনই সকাল ছটায় এলার্ম দেওয়া থাকে। এলার্ম বাজতে এখনো পনেরো মিনিট বাকি। খানিকটা বিরক্তই হলেন তিনি। যে শব্দে তার ঘুম ভেঙেছিল সে শব্দটা এখন আর শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না যে এত জোরে কানের কাছে কিসের শব্দ হল! যাই হোক আর আড়ামোড়া ভেঙে বিছানায় উঠে বসে মোবাইলটা নিয়ে এলার্ম অফ করে দিলেন।
টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের বাইরে মৈনাকের ঘটনা প্রমাণ করে যে শুধু ভাষা দিয়ে নয়, সংস্কৃতি বা চেহারাকেও এই বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে, অতএব এটি একটি ত্রিমুখী আক্রমণ, যাতে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাঙালীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় !
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপর বীতশ্রদ্ধ হয়েই রাজতন্ত্র ফেরত চাইছেন নেপালবাসীরা। ২০০৮ সালে এ দেশে প্রথম নির্বাচন হওয়ার পর একটি সরকারও পূর্ণ মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। গত ১৭ বছরে এক ডজনের বেশি প্রধানমন্ত্রী বসেছেন নেপালের শীর্ষপদে। নড়বড়ে সরকারগুলি নীতিপঙ্গুতে ভোগে, উন্নয়নের কাজে এগোয় না, বেকারত্ব ঘোচে না, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে, ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের দুর্দশা। সেই জায়গা থেকেই কি আজকে নেপালের এই পরিস্থিতি?
প্রখ্যাত ইংরেজ লেখক ফ্রান্সিস বেকন বিচারকদের উদ্দেশে বলেছিলেন যে তাঁদের কর্তব্য হচ্ছে দেশের জনসাধারণের কল্যাণসাধন। কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে বিচারব্যবস্থাটাই মোটের ওপর শাসকদলের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী সম্পর্কসূত্রে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছে!—বেকন-এর এই ক্ষোভ যে কতটা সত্য তা আমরা তো আমাদের দেশে অহরহ প্রত্যক্ষ করে চলেছি। উমর খালিদ, শার্জিল ইমাম সহ অন্যান্যদের বিনা বিচারে জেলে রাখা তার প্রকৃষ্ট ও সাম্প্রতিকতম উদাহরণ।
জাভেদ আখতার স্বঘোষিত নাস্তিক। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখার জন্য একাধিকবার তিনি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তার ব্যক্তিগত মতামত ধর্মপালনকারী মুসলমানদের কাছে আপত্তিকরও বটে! এ'কথা সত্য। আর এতেই মৌলবাদীদের আপত্তি। সে আপত্তি থাকতেই পারে। তবে তার জন্য একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করবে কেন?