"বাংলায় রিলিজিয়ন এসেছে বাইরে থেকে। বৌদ্ধ, জৈন, ব্রাহ্মণ্য, ইসলাম, খ্রীষ্টান। সবকটি ধর্ম চরিত্রে রেজিমেন্টাল বা নিয়ন্ত্রণভিত্তিক। সবকটিই পরবর্তীকালে দ্বিধা ত্রিধা বিভক্ত হয়েছে। একসঙ্গে মিলেমিশে চলতে পারেনি। এই সমস্ত ধর্মই চরিত্রে অসহিষ্ণু। বাংলা এদের সকলকে জায়গা দিয়েছে কারণ বাংলার লোকায়ত আচার বা দর্শন প্রবলভাবে পরমত সহিষ্ণু। কিন্তু এই সমস্ত ধর্মগুলো এসে এখানে সমুদ্রের গভীরে নামতে পারেনি। উপরে ভাসমান পরশ্রমজীবি একদল মানুষের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করেছে মাত্র।" ছোটলোক ভদ্রলোক - বাংলাকথা বইটি পড়ে দেখলেন আজমল হুসেন।
বাংলার সমাজের সর্বস্তরে আরএসএস অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। বেছে বেছে মুসলমান প্রধান জেলাগুলিতে ক্রমাগত নাশকতার ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে, যেই জেলাগুলিতে নিম্নবর্ণের হিন্দু মুসলামান সমন্বয়ের সাথে শতকের পর শতক বাস করেছেন। আরএসএসের রাজনীতি এটাই, ক্রমাগত মুসলিমবিদ্বেষ চালিয়ে যাওয়া। এবং আরএসএসের বাড়বাড়ন্তের দায় মূলতঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল তৃণমূলের –এই দলের নৈতিকতা আরএসএসের অনুসরণেই চলে। এর বিরুদ্ধে একদিকে যেমন বুনিয়াদি লড়াই জরুরি তেমন পাল্টা ভাষ্য তৈরী করার ও প্রয়োজন আছে।
আমাদের দেশে নানা ভাবে চলছে সাধারণ মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক লুঠতরাজ। আমি যা বলব আমিই গুরু। আর আমি সংখ্যাগুরুর গুরু…অতএব, সংখ্যালঘুদের মারতে হবে, ধরতে হবে, তাদের জমিজমা নিতে হবে, দরকার হলে আইন সংশোধন করতে হবে, তাদের আওতার জমির দিকে হাত বাড়াতে হবে, যাতে তাদের শক্তি কমে যায়। আর হ্যাঁ … এমনভাবে এই কাজ করতে হবে - যাতে তাদের বোঝানো যায় যে তোমরা বাপু নাদান লোক, আমরা যখন আছি তোমাদের আর চিন্তা কী?
পরিতোষের সাইকেল সারানোর দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল শুভম। কিন্তু দোকানদারকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। কয়েকদিন ধরেই সাইকেলটা নানাবিধ সমস্যায় ভোগাচ্ছে... প্রতিদিনই কিছু না কিছু খারাপ হয়েই যাচ্ছে তাই যেভাবেই হোক সাইকেলটা ভাল করেই সারাতে হবে... কিন্তু পরিদা যে কোথায় গেল! শুভমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সাইকেলের দোকানের পাশের ঠেক থেকে একটা ছেলে বলল- পরিদাকে খুঁজছ তো? শুভম সম্মতি জানাতেই সে বলে উঠল- পরিদা আমলাদহি বাজারে গেছে।
আধুনিক যুগে পেট্রোলিয়াম হল জ্বালানি ও শক্তির অন্যতম উৎস। পরিবেশ আন্দোলনকারী দের অনেকেই মনে করেন, পেট্রোলিয়াম বেশি কার্বন নিঃসরণ করে। সেই বিচারে বায়োফুয়েল ইথানল অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। এই ধারণা বেশ কিছু পরিবেশ আন্দোলনকারীর ভাবনায় ঢুকে গেছে। ফিদেল কাস্ত্রো এই ধারণার ভ্রান্তি গুলি দূর করতে বেশ কিছু নামিদামি অধ্যাপক গবেষকদের লেখা পত্র ও মতামতের সাহায্য নিয়েছিলেন। লক্ষ্যণীয় পরিবেশ কর্মীর চিন্তা ও দাবি গুলি কিভাবে পুঁজিবাদের স্বার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে যায়।
প্রশ্নটা কেবল প্রীতির নয়, প্রশ্নটা অধিকারের দায়িত্বের সম্মানের আত্মপরিচয়ের। সেইখানেই হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িকতা। দাঙ্গা তার খুব ক্ষণসাময়িক একটা প্রকাশ মাত্র। প্রতিদিনই আমাদের সমাজে যে মানসিক দাঙ্গা ঘটে চলেছে, মানসিক বিচ্ছেদের যে বিস্তার ছড়ানো আছে আমাদের পরস্পরের অজানা-অচেনায় তার চেয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িকতা আর কিছু নেই।” লিখেছিলেন শঙ্খ ঘোষ। আজ মুর্শিদাবাদ জেলার সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরে এই কথাগুলোই আবার মনে করতে হচ্ছে।
২০২৫ সালে ভারতের সরকারি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩.৫৮ ট্রিলিয়ন ডলার, যা আমাদের টাকায় প্রায় ২৯৫ লক্ষ কোটি। পশ্চিমবঙ্গের ঋণ এখন ৬.৯৩ লক্ষ কোটি টাকা। এই বিশাল ঋণ নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন উঠছে—এটা কি আমাদের উন্নতির পথ দেখাচ্ছে, নাকি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমস্যা বাড়াচ্ছে? এই ঋণের পরিমাণ, এর ভালো-মন্দ দিক, সমস্যা আর সমাধান নিয়ে আলোচনা করলে বুঝতে পারি কি পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ নিয়ে শাসকদল তৃণমূল, তাদের নেতৃত্ব, মায় মন্ত্রীসভা বিপুল দুর্নীতি করেছে, যা তৃণমূলের স্বভাবসিদ্ধ, এবং ধরা পড়ে যাওয়াতে সেই দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার অপরিসীম কিন্তু অপরিণত চেষ্টা করেছে।কিন্তু তা বলে সুপ্রীম কোর্টকে ছাড় দেওয়া যায়? তাঁরা কি এর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংবিধানের কথা মাথায় রেখেছে? যোগ্য শিক্ষকরা কিন্তু তৃণমূলের দুর্নীতি এবং সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে এখনও আন্দোলনে আছেন এবং যতদিন না দাবি আদায় হয়, রাস্তায় থাকবেন।
হিন্দু মেয়েদের ‘রক্ষা’ করতে যেমন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো সদা তৎপর, তেমনি মুসলিম মেয়েদের প্রতি যৌন হিংসাকে অনেক সময় হিন্দু পুরুষের ‘কর্তব্য’ হিসেবে দেখা হয়। আরএসএসের পথপ্রদর্শক সাভারকর তাঁর লেখায় শিবাজীর সমালোচনা করেন, কারণ তিনি মোঘলদের সাথে যুদ্ধের সময় মুসলিম নারীদের ধর্ষণের নির্দেশ দেননি। তাই বিজেপি ক্ষমতায় আশার পর থেকে কেন্দ্রীয় আর ডাবল ইঞ্জিন সরকারগুলির প্রত্যক্ষ মদতে পুনর্নিমিত হচ্ছে ‘রাম’ ও ‘শিবাজী’র চরিত্র—তারা আর ভক্তি বা ন্যায়ের প্রতীক নন, বরং অস্ত্রধারী, আগ্রাসী পুরুষত্বের প্রতীক।
হুগলী চাঁপদানিতে আখাড়ার অস্ত্র যাত্রা সূচনা হয়, ২০১০ সাল থেকে। তখন লাঠি, বাঁশ হাতে মিছিল করতেন কিছুজন গেরুয়াধারী। প্রধানত, ২০১৬-২০১৭ পর থেকে রামের ভাসানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, মুসলমানের কার্যত বনধ পালন করা শুরু হয়। তা স্বচক্ষে দেখে আপ্লুত সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। এই অনুষ্ঠান থেকে স্যোশাল মিডিয়ার পোস্টের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে জানিয়েছেন, "রামনবমী উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় আজ অংশগ্রহণ করেছিলাম, চাঁপদানী বিধানসভায়। সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আবার বুঝলাম, মানুষ সম্প্রীতির পক্ষে, শান্তির পক্ষে, মানুষের পক্ষে। কিন্তু এই কথার সত্যতা কী ? আসলে এই আখাড়াগুলোই কি আছে বাংলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার পিছনে ?
হুগলী চাঁপদানিতে আখাড়ার অস্ত্র যাত্রা সূচনা হয়, ২০১০ সাল থেকে। তখন লাঠি, বাঁশ হাতে মিছিল করতেন কিছুজন গেরুয়াধারী। প্রধানত, ২০১৬-২০১৭ পর থেকে রামের ভাসানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, মুসলমানের কার্যত বনধ পালন করা শুরু হয়। তা স্বচক্ষে দেখে আপ্লুত সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি। এই অনুষ্ঠান থেকে স্যোশাল মিডিয়ার পোস্টের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে জানিয়েছেন, "রামনবমী উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় আজ অংশগ্রহণ করেছিলাম, চাঁপদানী বিধানসভায়। সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আবার বুঝলাম, মানুষ সম্প্রীতির পক্ষে, শান্তির পক্ষে, মানুষের পক্ষে। কিন্তু এই কথার সত্যতা কী ? আসলে এই আখাড়াগুলোই কি আছে বাংলায় সাম্প্রদায়িক হিংসার পিছনে ?
হিন্দু মেয়েদের ‘রক্ষা’ করতে যেমন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো সদা তৎপর, তেমনি মুসলিম মেয়েদের প্রতি যৌন হিংসাকে অনেক সময় হিন্দু পুরুষের ‘কর্তব্য’ হিসেবে দেখা হয়। আরএসএসের পথপ্রদর্শক সাভারকর তাঁর লেখায় শিবাজীর সমালোচনা করেন, কারণ তিনি মোঘলদের সাথে যুদ্ধের সময় মুসলিম নারীদের ধর্ষণের নির্দেশ দেননি। তাই বিজেপি ক্ষমতায় আশার পর থেকে কেন্দ্রীয় আর ডাবল ইঞ্জিন সরকারগুলির প্রত্যক্ষ মদতে পুনর্নিমিত হচ্ছে ‘রাম’ ও ‘শিবাজী’র চরিত্র—তারা আর ভক্তি বা ন্যায়ের প্রতীক নন, বরং অস্ত্রধারী, আগ্রাসী পুরুষত্বের প্রতীক।
বহু মানুষ বহু কথা বলছেন, চাকরিহারা শিক্ষকদের ডেকে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিচ্ছেন, কিন্তু অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া একজন মানুষের জীবন সেই সব কথা শুনতে নারাজ। তাঁদের দাবি, তাঁদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। আন্দোলন করতে গিয়ে জুটছে পুলিশের লাথি, লাঠি। সদ্য চাকরি হারা এক শিক্ষিকার আখ্যান থাকলো আপনাদের সামনে। কী করা উচিৎ, ভাবুন। এই মানুষদের হয়ে কথা না বলে শুধু রাজনীতি আপনি করতেই পারেন, কিন্তু তাতে কি খুব কিছু লাভ হবে?
শুভেন্দু অধিকারীরা আওয়াজ তুলেছেন, হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই! সারা রাজ্যে পোস্টার পড়েছে, হিন্দুদের ভোট যেন তৃণমূল কংগ্রেসে না যায়! ভোট আসলেই হিন্দুত্ববাদীদের হিন্দুদের কথা মনে পড়ে। এদিকে সারা দেশে হিন্দু জনসংখ্যার গরিষ্ঠ অংশের অবস্থা কী? ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গোটা দেশে দলিতদের ওপর সবর্ণদের অত্যাচার মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দলিত নির্যাতন, দলিত মহিলাদের ধর্ষণ, খুন চরমে উঠেছে। আর এ ব্যাপারে এগিয়ে আছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি।
২০১৬ সালের এস এস সি নিয়োগে শাসক দলের ওপর তলা থেকে নীচের তলার নেতাদের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রুপ সি, ডি নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ এর সমস্ত নিয়োগই এক কলমের খোঁচায় পুরো বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এখন এসএসসির ২৫০০০ শিক্ষক বাতিলের সুপ্রীম কোর্টের রায়ের পরে আবার দুর্নীতি ইস্যু সামনে এসেছে। এই ইস্যুতে সরকার পরে গিয়ে তো আর নতুন বাম সরকার হবে না, হবে বিজেপির সরকার। আর বিজেপি এলে সরকারি স্কুলগুলো উঠে গিয়ে সেখানে আদানি, আম্বানি দের মত বড় বড় কর্পোরেট দের নামী স্কুল খোলার পথই প্রশস্ত হবে। সেই জন্যেই কি এই ধরনের অমানবিক রায়?
(১) অবশেষে আর্য আর ইরার বিয়েটা হয়েই গেল। পরেরদিন ইরার মা মন্দিরে পুজো দিয়ে এসে ওর বাবার কানেকানে বলল—যাক বাঁচা গেছে। একত্রিশ বছরের নাকউঁচু মেয়ে শখানেক ছেলেকে রিজেক্ট করার পরে ফাইনালি স্বেচ্ছায় বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে, এই অনেক। আমাদের দুশ্চিন্তা ও আর কী বুঝবে!