বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানচেতনার বিকাশ দাবি করে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিস্তৃতি যা ব্রাহ্মণ্যবাদী শাসকরা কোনোদিন মানতে পারেন নি। যজুর্বেদে চিকিৎসকদের ওপর নানা ধরণের প্রায়শ্চিত্তাদির ফরমান জারি হয়েছে। মনু সংহিতায় চিকিৎসকদের কাজকে ঘৃণ্য বলা হয়েছে। চিকিৎসকরা জাত মানে না, ছোঁয়াছুঁয়ি মানে না, সবার গায়ে হাত দিয়ে চিকিৎসা করে, মানুষকে 'অখাদ্য কুখাদ্য' খেতে পরামর্শ দেয়, তাই তাঁদের একঘরে, ত্যজ্য, এবং জরিমানা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। আর আজ এই মনুর উত্তরসূরিরাই দেশের ক্ষমতায়।
পেরিয়ারের মতো একজন ব্যক্তিত্বকে হজম করা হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষে খুবই কঠিন কাজ ছিল এবং তারা প্রথম থেকেই আদাজল খেয়ে তার মতবাদের বিপক্ষে যা যা করা যায় সবই করেছেন। তাঁর বিভিন্ন লেখাপত্র, তার তৈরি করা সংগঠনের বিরুদ্ধে আদালতে গেছেন, তামিলনাড়ুতে বিভিন্ন জায়গায় তাঁর যেসব মূর্তি আছে তাতে জুতোর মালা পরিয়েছেন, কালি লেপেছেন। কারণ ১০০ বছর পরেও তার মতবাদের ঝাঁজ কমে তো নিইই বরং অনেকটাই বেড়েছে।
কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে, আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে শেষ হলো ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট। সারা প্রতিযোগিতায় ভাল খেলেও ভারতের ১১ জন ক্রিকেটার পরাজিত হলেন, তবুও তাঁরা পেলেন বাহবা, কোটি কোটি টাকা। কিন্তু ভারতের ৪১ জন শ্রমিক যে উত্তর কাশীতে সিল্কায়ারা সুড়ঙ্গ কাটতে গিয়ে আটকে রয়েছেন, তাঁদের জন্য কি আমরা প্রার্থনা করেছি? দেশের জন্য টানেল কাটতে গিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকরা, যাঁদের সুড়ঙ্গয় আটকে পড়ার পর বেরিয়ে এলে পরে নিজেদের পারিশ্রমিকের বাইরে এতটুকু বেশি পয়সা পাবেন কিনা তাও কেউ জানে ?
ফাকুঃ পরিস্থিতি কী বুজ্জিস টাকু? টাকুঃ খুব খারাপ। এটা তুই কী করলি? ফাকুঃ আমি আবার কী করলাম? টাকুঃ এই যে সেদিন ক্রিকেটের ব্যাপারে ফস করে একটা টুইট করে এলি?
সরনায়েকের বাড়ি থেকে বেরুতে বেরুতে কবিতা বলল," কুকুরটার এবার একটা কিছু করা উচিত"। রাস্তা উঁচু-নিচু, জায়গায় জায়গায় ইটের টুকরো, খোয়া নাক উঁচিয়ে আছে। ঠোক্কর খেলে নখ উড়ে যেতে পারে,মুখ থুবড়ে পড়ে যেতেও পারি। গত শনিবার পড়ে গেছিলাম প্রায়। কবিতাই আমায় ধরে ফেলে।
এইবারে ২৯ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব যা প্রদর্শিত হতে চলেছে ৫ থেকে ১২ই ডিসেম্বর পর্যন্ত যাতে সবথেকে আমাদের ভারতবর্ষের সমাজে প্রতিবাদ ও আঙ্গিকের উপর ডকুমেন্টারি ফিল্ম আছে একগুচ্ছ।
রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদী গৈরিক ফ্যাসিবাদীরা অবশ্য চিরকাল এমনই হয়। ইতিহাসের পাতা খুঁড়ে তারা সব থেকে প্রতিক্রিয়াশীল ভাবনাচিন্তাগুলোকেই তুলে নিয়ে আসে বর্তমানের জমিতে। আসলে এরা প্রকৃত অর্থেই অতীত প্রতিক্রিয়ারই পতাকা বয়, তারই ধারাবাহিকতাকে রক্ষা করে। তাই ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম (Indian Knowledge System) বা ভারতীয় জ্ঞান পদ্ধতির আদলে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার ঝাঁপিয়ে পড়েছে গোটা উচ্চশিক্ষাকে এই তথাকথিত ভারতীয় জ্ঞান পদ্ধতির ছকে গুছিয়ে তুলতে।
পাম তেল বেশ কিছুদিন অতি লাভজনক আন্তর্জাতিক ব্যবসা। দানবীয় বহুজাতিক কোম্পানিরা দুভাবে এর উৎপাদন বৃদ্ধি করে – (১) সরাসরি বিভিন্ন দেশের ওপরে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক চাপ সৃষ্টি করে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে এর ফলন ঘটায়, কিংবা (২) দরিদ্র বা মধ্য কৃষকদের নগদ মুনাফার লোভ দেখিয়ে জমিতে চাষের ধরণ রূপান্তরিত কর। যেভাবেই করুক, শেষ অব্দি বহুজাতিকের বিলিয়ন ডলার ব্যবসা হয়। অন্যদিকে কৃষির চরিত্র বদলে যায়।
জলপথে যাত্রা করা জাহাজ দখল করা ইউরোপীয় জলদস্যুরা যখন রাজানুগ্রহে জাহাজে করে বাণিজ্য করতে এসে দেশ দখল করে তখন তারা হয়ে ওঠে আবিষ্কারক। ইউরোপ থেকে এভাবেই ভারতে আগমন করেছিল ভাস্কো-দা-গামা। লুঠেরা পর্তুগিজরা রাজ্য স্থাপন করেছিল গোয়া, কালিকটে।
অনেক দিন পর এই মফস্বল শহরে আসতে হলো। এখানে স্থানের মাহাত্ম্য না থাকায় আর নামোল্লেখ করছি না। কর্মসূত্রে একসময় বেশ কিছুদিন এখানে থেকেছি। আগেও কর্মসূত্রেই এখানে আসতে হয়েছে। ফলে রাস্তাঘাট চেনা। তাই যখন আমাদের লোকাল ট্রেনটা অবরোধের নাগপাশ কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চারঘন্টা পরে প্রায় মাঝরাত করে পৌঁছল, তাতে বেশি বিচলিত হইনি।
অনেক দিন পর এই মফস্বল শহরে আসতে হলো। এখানে স্থানের মাহাত্ম্য না থাকায় আর নামোল্লেখ করছি না। কর্মসূত্রে একসময় বেশ কিছুদিন এখানে থেকেছি। আগেও কর্মসূত্রেই এখানে আসতে হয়েছে। ফলে রাস্তাঘাট চেনা। তাই যখন আমাদের লোকাল ট্রেনটা অবরোধের নাগপাশ কাটিয়ে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চারঘন্টা পরে প্রায় মাঝরাত করে পৌঁছল, তাতে বেশি বিচলিত হইনি।
জলপথে যাত্রা করা জাহাজ দখল করা ইউরোপীয় জলদস্যুরা যখন রাজানুগ্রহে জাহাজে করে বাণিজ্য করতে এসে দেশ দখল করে তখন তারা হয়ে ওঠে আবিষ্কারক। ইউরোপ থেকে এভাবেই ভারতে আগমন করেছিল ভাস্কো-দা-গামা। লুঠেরা পর্তুগিজরা রাজ্য স্থাপন করেছিল গোয়া, কালিকটে।
মহুয়া মৈত্রকে কেন্দ্র করে প্রহসনের রাজনীতিতে বিজেপির একটাই লাভ, তাঁরা একদম নীচের তলায় এই বার্তা পৌছতে সক্ষম হবে, যে আদানির দুর্নীতির থেকেও বড়, মহুয়া মৈত্রর টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার দুর্নীতি। তিনি টাকা নিন অথবা না নিন, বিজেপি কিন্তু এই প্রচারটাই করবে, তাঁদের পোষা গোদী মিডিয়া মারফত। তাহলে সামনে কী ? এই মহিলা সাংসদের জন্য কি বন্ধ হতে চলেছে, সংসদের দরজা? মোদী এবং আদানিই কি জিতে যাবেন এই লড়াই, নাকি সত্যিটা প্রকাশ পাবে একদিন?
তোমাদের সন্তানদের তোমরা শেখাবে যে তাদের পায়ের নীচের মৃত্তিকাতে তাদের প্রপিতামহদের ভস্ম রয়েছে। তারা যাতে মাটিকে শ্রদ্ধা করতে পারে সেজন্য তাদের শেখাও পৃথিবী আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবন দিয়ে পূর্ণ। তোমরা আমাদের যা শিখিয়েছ, সন্তানদেরও সেটাই শেখাও – এই পৃথিবী হচ্ছে মা। যা কিছু পৃথিবীকে আঘাত দেয়, আহত করে সে সবকিছুই পৃথিবীর সন্তানদেরও আঘাত দেয়। যখন মানুষ মাটিতে থুতু ফেলে সে নিজের ওপরেই থুতু ফেলে।
দাঙ্গার সময়। চারিদিকে রক্তস্রোতে ভাসছে রাস্তাঘাট। হঠাত হঠাত জ্বলে উঠছে আগুনের লেলিহান শিখা, রইছে রক্তধারা নদীস্রোতের মত। মানুষ যেন রক্তপিপাসু ভ্যাম্পায়ার। ধর্মের নামে শুধু সে রক্ত চায়, নরবলি আর মানুষের কুরবানির হিড়িক চলেছে চারিদিকে। মৃত্যুর ধ্বংসলীলার তাণ্ডব চলছে সর্বত্র।
গত কয়েক দশক ধরে পরিবেশ নিয়ে বিশ্বব্যাপী চর্চা চলছে। অন্য অনেক বিষয়ের মত পরিবেশ আন্দোলনও যেন পাশ্চাত্যের ‘সুসভ্য’ জাতিগুলির অবদান। গ্রীনপিস মুভমেন্ট, গ্রেটা থুনবার্গ এসব নাম ওয়াকিবহাল সকলের জানা। কিন্তু কারা ধ্বংস করেছিল, করছে এই পরিবেশ? আমাদের দেশেও পরিবেশ ধ্বংসের বীজ বুনেছিল কারা? জল জঙ্গলের উপর নির্ভরশীল পরিবেশপ্রেমী মানুষজনের জ্ঞানবুদ্ধি বিচার বিবেচনাকে অগ্রাহ্য করে এদেশের পরিবেশের সর্বাধিক ক্ষতির সূচনা করেছিল ওই উপনিবেশবাদী পাশ্চাত্যের শাসকরা। বহু বিষয়ের মত পরিবেশকেও নতুন আলোকে দেখতে শিখিয়েছিল সত্তরের দশক। তবে তৎপরবর্তীতে পরিবেশ সংক্রান্ত তাত্বিক গবেষকদের সঙ্গে ফলিত পরিবেশ জ্ঞান সম্পন্ন ‘নিম্নবর্গের’ মানুষজনের দূরত্ব না ঘোচায় পরিবেশ সংক্রান্ত সামগ্রিক জ্ঞান বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।