পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

সে যে আমার জন্মভূমি

  • 24 July, 2021
  • 1 Comment(s)
  • 1999 view(s)
  • লিখেছেন : অত্রি ভট্টাচার্য
হিন্দু জনসংখ্যার ৬৪% মনে করে ' প্রকৃত ' ভারতীয় হতে গেলে ধার্মিক হিন্দু হওয়া বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক পাঁচজন মুসলমানের মধ্যে একজন ব্যক্তির ধর্মের ভিত্তিতে লাঞ্ছনা ও অপমানের অভিজ্ঞতা হয়ে চলেছে। এই সেই ভারত যে দেশ ৭৫ বছর ধরে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ঐক্যের সাধনা করেছে, আজ সে ধর্মীয় রাষ্ট্র হয়ে উঠতে চাইছে। এবং হয়ে ওঠার পথে অনেকটা সফল। বিশ্লেষণ করেছেন অত্রি ভট্টাচার্য।

সলমন রুশদির ভাষ্য অনুযায়ী 'মধ্যরাতের সন্তান' যে ভারতবর্ষ সেই দেশ আজ উঠতে চাইছে ধর্মীয় রাষ্ট্র। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষতা ও বিভেদের মধ্যে ঐক্যের সঙ্গে অতিবাহিত করবার পর তার এই রূপ বদলের
আকাঙ্ক্ষা। এখানে অবশ্যই ইন্ধন আছে সঙ্ঘ পরিবারের; আছে নয়া-উদারবাদী অর্থনীতির প্রণয়ন পরবর্তী কালে ' সোশ্যালিস্ট ' আর্থকাঠামোটির নামমাত্র থেকে যাওয়া। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ডিসকোর্সটি পরিণত হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সমঝোতার ঘোষণায় । পিউ ফোরাম নামক গবেষণাকেন্দ্রের একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা আমাদের জানান দিচ্ছে 'আর্থ-সামাজিক' নয়; ভারতবর্ষের রাজনৈতিক বয়ান ক্রমশ ঘুরে যাচ্ছে 'সামাজিক-ধার্মিক' অবয়বের দিকে। খুব বিশ্লেষণাত্মক না হয়েও বলাই যায়, এই 'ভারত'-এর নির্মাণ মিলিট্যান্ট হিন্দুত্বের জনমুখী আবেদন ও লিবারাল বাম-গণতান্ত্রিক শক্তিগুলির ক্রমশ প্রান্তিক হয়ে যাওয়ার যুগপৎ ফলাফল । রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের যে মনোকামনা, রাজনীতিকে হিন্দুত্ব দ্বারা পরিচালিত করা তাতে তারা সম্পূর্ণভাবে সফল। সেটা আমরা দেখতেও পাচ্ছি শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর আচমকা শিবভক্তিতে ; 'পোস্ট আইডিওলজিক্যাল' রাজনৈতিক নেতৃত্ববর্গ যথা : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের হনুমান চালিশা ও চন্ডীপাঠে। এই সমীক্ষাটির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল :ভারতবর্ষের জনতার মনস্তাত্ত্বিক গড়নে একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি ঘৃণামিশ্রিত 'আদারনেস'-এর এক অদ্ভুত সমাহার । যা আসলে নেহরুভিয়ান এলিট ও মার্ক্সীয় ইতিহাসবীক্ষার চিরকালীন ধারার বিরুদ্ধে উগ্র দক্ষিণপন্থী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত সাধারণ জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ । অতএব ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে রক্তাক্ত ইঁদুর মুখে নিয়ে রাষ্ট্রময় ঘুরে বেড়াবে । লিঞ্চিং-য়ের চুঁইয়ে আসা সেই রক্ত ধুয়ে দেবে সংবিধানের সাদা মার্বেল মেঝে । অলক্ষ্যে চোয়াল শক্ত হবে বাবাসাহেব আম্বেদকরের । ভিড় করে এই নতুন 'ভারতবর্ষ' -কে দেখবেন সদাযুবক গণেশ ঘোষ ও চট্টগ্রামের ছেলেরা। গান্ধীর চশমা বসিয়ে দেওয়া হবে সরকারী বিজ্ঞাপনে ।নকশালবাড়ি-ভোজপুর-বাথানিটোলার শহীদদের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে , হয়েই যাবে । এহেন ভূতের নাচ আমাদের দেখতে হবে। দেখতেই হবে ।



যাই হোক ; এই পরিসংখ্যানটি থেকে আমরা জানতে পারছি:

১. ভারতবর্ষের হিন্দু জনসংখ্যার ৬৫% থেকে ৬৭% এবং মুসলিম জনসংখ্যার ৭৬% থেকে ৮০% মানুষজন মনে করেন তাদের ছেলেমেয়েদের নিজেদের ধর্ম ছেড়ে ভিনধর্মে বিবাহ করা উচিত নয়।
( লাভ জিহাদের আইন তাই সহজেই ইতিমধ্যে কয়েকটি রাজ্যে আনা গিয়েছে)

২. হিন্দু জনসংখ্যার ৬৪% মনে করে ' প্রকৃত ' ভারতীয় হতে গেলে ধার্মিক হিন্দু হওয়া বাধ্যতামূলক । হিন্দু জনসংখ্যার ৫৯% মনে করে সুস্পষ্ট হিন্দি বলতে পারে যারা তারাই প্রকৃত ভারতীয়।
( হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্থান প্রোজেক্ট বেশ সফল !)


৩. প্রত্যেক পাঁচজন মুসলমানের মধ্যে একজন ব্যক্তির ধর্মের ভিত্তিতে লাঞ্ছনা ও অপমানের অভিজ্ঞতা হয়ে চলেছে ।
( এবং 'মুসলমান যাও পাকিস্তান' শ্লোগানটিও প্রভাব বিস্তার করেছে )

৪. হিন্দু জনসংখ্যার ৪৩% মনে করে স্বাধীনতা পরবর্তী দেশভাগ হিন্দু মুসলমান সম্পর্কের জন্য ভাল পদক্ষেপ ছিল. মুসলমান জনসংখ্যার ৪৮% মনে করে স্বাধীনতা পরবর্তী দেশভাগ হিন্দু মুসলমান সম্পর্কের জন্য খারাপ পদক্ষেপ ছিল।

৫. ভারতবর্ষের সামগ্রিক জনসংখ্যার মধ্যে ৬২% পুরুষ ও ৬৪% মহিলারা মনে করেন অপর কাস্টে বা বর্ণে ছেলেমেয়েদের বিবাহ আটকানো উচিত ।
( হিটলারের জার্মানিতে আর্যরক্তের বিশুদ্ধতা ও বর্ণসংকরের ভয়ে অসবর্ণ
বিবাহজনিত ট্যাবু স্মরণীয় )

৬. ভারতবর্ষের ৯৭% জনগণ ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন নিরক্ষরদের মধ্যে ৯৬% ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে ৯৬ % ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন
( নাস্তিকরা মোটামুটি সিলেবাসের মার্জিনে দাঁড়িয়ে আছেন )

৭. ভারতবর্ষের সামগ্রিক জনসংখ্যার ৯৯% নিজেদের ধর্মের মধ্যেই বিয়ে করে থাকেন

৮. প্রত্যেক দশজন ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে সাতজনেরই নিকটজন অথবা
বন্ধুবান্ধবেরা তাদের নিজেদের কাস্টের অথবা জাতির ।

৯. ৯০% হিন্দু ও ৯০% মুসলমান বিশ্বাস করেন বয়সে বড়দের সম্মান না করলে
ভারতবর্ষকে অসম্মান করা হয় ।

১০. ৭২% হিন্দু গোমাংস খাওয়াকে ও ৭৭% মুসলমান শুয়োরের মাংস খাওয়াকে গর্হিত ধর্মীয় অপরাধ মনে করেন ।

এখন আমার একটি সহজ প্রশ্ন ভারতবর্ষের সমাজ পরিবর্তন ইত্যাদি নিয়ে যারা ভাবছেন শুধুমাত্র তাদের প্রতি; বিজেপিকে হারানোটা নিঃসন্দেহে বড় প্রশ্ন কিন্তু একইসঙ্গে এই কথাও যাচাই করা দরকার যে আমরা নিজেরাই নিজেদের কাছে হেরে বসে নেই তো ?

৫৩% ভারতীয় যদিও মনে করেন বিভিন্নতা আমাদের দেশের জন্য লাভদায়ক ; একথা বেশ আশাব্যঞ্জক । আবার এটাও উল্লেখযোগ্য যে , ৮৪% ভারতীয় বিশ্বাস করেন সাচ্চা ভারতীয় হতে গেলে অপরের ধর্মকে সম্মান করা আবশ্যিক । আবার সাচ্চা ধার্মিক হওয়ার গুণাবলীর মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় হল অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা
এমন মনে করেন ৮০% ভারতীয় । অথচ প্রত্যেক তিনজন ভারতবাসীর মধ্যে দুজন অন্যধর্মে ও অন্যজাতে বিবাহে নারাজ ।

প্রতিবেশী চয়নের প্রশ্নে ৩৬%হিন্দু নিজের প্রতিবেশী হিসাবে মুসলমান জনগোষ্ঠীকে চাইছেন না । অবশ্য হিন্দু-মুসলিম উভয় ধর্মীয় গোষ্ঠীই ধার্মিক আচার-আচরণকেই নিজস্ব আত্মপরিচয়ের চিহ্ন হিসাবে মনে করছেন । ৬৭% মুসলমান নামাজ পড়া ও ৬১%মুসলমান মসজিদে যাওয়াকে প্রকৃত মুসলমানের গুণাবলী মনে করেন । এবিষয়ে ৪৮%হিন্দুরা মনে করেন মন্দিরে না গেলে বা নিয়মিত প্রার্থনা না করলে কেউ প্রকৃত-হিন্দু হতে পারেনা ।

এই সমীক্ষাটি করা হয়েছে নভেম্বর ১৭, ২০১৯ এবং মার্চ ২৩ , ২০২০ -এর মধ্যে এবং এই সমীক্ষার মূল উপাদান হলেন ২৯,৯৯৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয়। যাদের মধ্যে ২২,৯৭৫ জন হিন্দু ও ৩,৩৩৬ জন মুসলমান ধর্মাবলম্বী মানুষ ।
উল্লেখযোগ্য ভাবে , দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) -বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন এই সমীক্ষাটি করা হয়েছিল ।

প্রসঙ্গত, এই সমীক্ষায় দেখা গেছে জনমানসে জন্মান্তর সম্পর্কে বিশ্বাস কমছে । কিন্তু হিন্দু ও মুসলমান উভয় জনসমাজেই কর্মফল সম্পর্কে বিশ্বাস ও ধর্মীয় বোঝাপড়া প্রখর । সমীক্ষায় সামাজিক বিচ্ছিন্নতার প্রশ্নটি জাতপাত-বর্ণব্যবস্থার প্রশ্নে বেশ বোঝা যাচ্ছে । যদিও সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে কলেজ স্তরের শিক্ষিতদের মধ্যে অন্য ধর্মের বিবাহের থেকে অন্য জাতে বিবাহে বেশি সম্মতি রয়েছে ।

খুবই অদ্ভুত সমাপতন হল যে ভারতবর্ষের মাত্র ২০% জনগণ মনে করেন জাতপাতভিত্তিক বৈষম্য রয়েছে । যদিও দক্ষিণ ভারতে দায়ের করা বৈষম্যের কথা বলেছেন সর্বাধিক ৩০% দলিত । আরো অদ্ভুতভাবে এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে ধর্মীয় বৈষম্যের প্রশ্ন । ২৪% মুসলমান মনে করেন তাদের বিরুদ্ধে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হয় । ১৭% হিন্দুর মত হল মুসলমানরা ধর্মীয় বৈষম্যের শিকার । এই সমীক্ষাটির ইঙ্গিত আসলে বৈষম্যের প্রকারভেদকে নির্দেশ করছে ;যা আমাদের বুঝে নিতে হবে । আসলে কোনো একটি জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে যখন মূলস্রোতের সামাজিক ডিসকোর্স থেকে সুচারুভাবে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং সেটাকে অভ্যাসে পরিণত করা হয়; তখন সমাজের বহিরঙ্গে গোদাভাবে বৈষম্যের দেখা মেলেনা । বৈষম্য তখনই সম্ভবপর ; যখন দুটি যুযুধান জনগোষ্ঠী একই সামাজিক
স্থান পায় , একই প্রাপ্যের জন্য প্রতিযোগিতা করে , একই সমাজবিশ্ব ভাগ করে নেয় । এটাই তো স্বাভাবিক যে সমাজের অভ্যাস কোন একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীর প্রতি শুচিবায়ুগ্রস্ত আচরণ ; সেই সমাজে বৈষম্য আদপেও চিহ্নিত হবেনা । সাম্প্রতিক ফেনোমেনা অনুসারে, আমরা রাজনৈতিক পরিমন্ডলের সঙ্গে যে ধর্মীয় আচার ও জাতীয়তাবাদের ককটেল পান করছি তাও আসলে জনগণ দ্বারা স্বীকৃত ; জানাচ্ছে এই সমীক্ষা । সকল সম্প্রদায়ের দুই - তৃতীয়াংশ মানুষের মতে রাজনীতিবিদদের ধর্মীয় সংসর্গ সমস্যাজনক নয় ।

এই সমীক্ষায় উঠে আসা ভারতবর্ষের যে সামগ্রিক চিত্র ; তা একটি ধর্মীয় রাষ্ট্রেরই রূপরেখা । আদর্শগত ভাবে ভারতবর্ষের জনগণ ধর্মীয় বিভিন্নতাকে প্রাধান্য দিচ্ছে, একইসঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠতা-র ভাষ্যে নির্ধারণ করছে
সহিষ্ণুতার মাত্রা ও সংখ্যালঘুর ধর্মাচরণের সীমা-পরিসীমা , জনমানসে ব্যাক্তিগত স্বাধীনতার প্রশ্নে সমর্থন উধাও এবং স্বৈরাচারী হিন্দু-একনায়কতন্ত্রকেই জাতীয় পরিচিতির দিকচিহ্ন হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করানো হচ্ছে । মহামহিম বলতে কেবলই দুজন : স্বর্গে ঈশ্বর ও মর্ত্যলোকে রাষ্ট্র ।

ভারতবর্ষের জাতীয় উন্মাদনা ক্রিকেটের বিষয়ে গবেষকরা এই সমীক্ষায় একটি প্রশ্ন রেখেছিলেন: 'আপনার মতে ভারতবর্ষের ক্রিকেট দলকে সমর্থন করা সত্যিকারের ভারতীয় হওয়ার জন্য কতটা জরুরি?’। এর উত্তরে সায় দিয়ে হ্যাঁ বলেছেন ৭৯% হিন্দু, ৭৫% মুসলমান ও ৬৫% শিখ। কাজেই ভারত ম্যাচ হারলেমুসলমান মহল্লায় পাকিস্তানের পতাকা ওড়ানো হয় এমন হোয়াটসঅ্যাপ ফরোয়ার্ড বিভ্রান্তিজনক মনে হয় । যদিও এই প্রশ্নের উত্থাপন বোঝায় যে আজকের ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক সন্দর্ভ সম্পূর্ণভাবে হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । এই লেখাটি শেষ করার আগে একটাই কথা বলার; আমাদের প্রতিপাদ্য কখনোই এই গবেষণামূলক সমীক্ষাটি থেকে ভারতবর্ষের স্বরূপ চেনা নয়। অথবা এর বিপ্রতীপে ২০১৪-র ভারতবর্ষকে অসাম্প্রদায়িক অথবা বহুত্ববাদী জন্নত প্রতিপন্ন করাও নয় । আসলে আমাদের ম্যাপে অথবা অ্যাটলাসে কাশী বিশ্বনাথ চিনে আর কাজ নেই । এখন আমাদের সশরীরে কাশী গিয়ে বিশ্বনাথ দর্শনের সময় । বন্ধুগণ ; খেয়াল করবেন জনপ্রিয় উদ্ধৃতিযোগ্য কথা বলবো বলে আমিও 'হিন্দু ' দৃশ্যকল্প ব্যবহার করলাম।










তথ্যঋণ:

১.https://indianexpress.com/article/opinion/columns/the-religious-life-of-indians-according-to-a-recent-survey-7385080/

২.https://indianexpress.com/article/explained/explained-religions-in-india-living-together-separately-7394060/

৩.https://www.telegraphindia.com/amp/opinion/faith-and-the-absence-of-fraternity/cid/1821088?__twitter_impression=true&s=08

৪.https://www.pewforum.org/2021/06/29/religion-in-india-tolerance-and-segregation/

1 Comments

Soumi Basu

24 July, 2021

খুব ভালো লেখা

Post Comment