পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

মেয়েদের মিশন: দ্বিতীয় শ্রেণির অনধিকারচর্চা

  • 16 July, 2022
  • 0 Comment(s)
  • 1074 view(s)
  • লিখেছেন : অরুন্ধতী দাস
স্বামী বিবেকানন্দ ব্রহ্মচারিণীগণের জন্য মঠ প্রতিষ্ঠার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন, ঐ সঙ্কল্পকে ভিত্তি করিয়াই নিবেদিতা এই বিদ্যালয়ের স্থাপনা করিয়াছিলেন। এই বিদ্যালয়ের কার্য্যেই নিবেদিতা তাঁহার জীবন উৎসর্গ করিয়াছিলেন, এবং এই বিদ্যালয়ের কার্য্যেই তাঁহার জীবনদানও করিয়া গিয়াছেন। বোসপাড়ার একটী ছোট গলি, তাহার ভিতর একটী ক্ষুদ্র বিদ্যালয় এবং নিবেদিতার ন্যায় অসাধারণ প্রতিভাশালিনী একান্ত নিষ্ঠাব্রতাবলম্বিনী রমণী, যাঁহার পক্ষে পৃথিবীতে কোন কার্য্যে সফল হওয়াই অসম্ভব ছিল না,—নিবেদিতা তাঁহার সমস্ত জীবন ঐ ক্ষুদ্র বিদ্যালয়ের জন্য দান করিয়া গিয়াছেন।

বছর ছয়েক আগে বিখ্যাত ঐতিহাসিক বেটানি হিউজ় তাঁর ইন্টারভিউতে বলেছিলেন: “ইট ইজ় দ্য কনভিনিয়েন্ট ট্রুথ দ্যাট উইমেন হ্যাভ অলওয়েজ় বিন ফিফটি পারসেন্ট অফ দ্য পপুলেশন, বাট ওনলি অকুপাই অ্যারাউন্ড জিরো পয়েন্ট ফাইভ পারসেন্ট অফ রেকর্ডেড হিস্টরি।” কথাটা সমাজের সর্বস্তরেই যে সত্যি, এই পীড়াদায়ক উপলব্ধিটা আরও একবার উঠে এল রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫তম প্রতিষ্ঠাদিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে। গোটা দেশের নিরিখেই এমন বিপুল কর্মসফল প্রতিষ্ঠান কমই আছে। স্বাভাবিকভাবেই, সেই কর্মকাণ্ডের উজ্জ্বল স্মারক হয়ে থাকছে সর্বস্তরের বিবিধ স্বীকৃতি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, গোটা উদ্‌যাপন পর্বের কোথাও চোখে পড়ছে না মেয়েদের মিশন সম্পর্কে সামান্যতম কোনো স্বীকৃতি, কিংবা রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত কোনো মহিলা প্রতিষ্ঠানের সামান্যতম উল্লেখ! যেন এই গৌরবময় ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েদের সম্পর্কে এই বিস্মৃতি স্বাভাবিক!

‘মিশন’ বলতে শুধু রামকৃষ্ণ মিশনই বোঝায় কি? কিন্তু, সমান্তরাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে রামকৃষ্ণ মিশনেরও আগে, একদা মেয়েদের মিশনের পরিকল্পনা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ স্বয়ং। ১৮৯৫ সালে গুরুভ্রাতা স্বামী রামকৃষ্ণানন্দকে লেখা চিঠিতে তিনি বলছেন, “... জগতের কল্যাণ স্ত্রীজাতির অভ্যুদয় না হইলে সম্ভাবনা নাই, এক পক্ষে পক্ষীর উত্থান সম্ভব নহে। ... সেজন্যই আমার স্ত্রী-মঠ স্থাপনের জন্য প্রথম উদ্যোগ। উক্ত মঠ গার্গী, মৈত্রেয়ী এবং তদপেক্ষা আরও উচ্চতর ভাবাপন্ন নারীকুলের আকরস্বরূপ হইবে।” খেয়াল রাখতেই হচ্ছে, এই চিঠি যখন বিবেকানন্দ লিখছেন, বেলুড় মঠে তখনও পর্যন্ত রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠাই হয়নি। যদিও এত পূর্বপরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও, সারদা মিশন একটি প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে অবশ্য স্বামীজির মৃত্যুর প্রায় অর্ধশতক পরে, ১৯৫৪ সালে। কিন্তু উনিশ শতকের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোত হয়ে থাকা নিবেদিতার প্রতিষ্ঠিত স্বামীজির স্বপ্নের বালিকা বিদ্যালয়টি চালু হয়েছিল ১৮৯৮ সালেই, অর্থাৎ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠার ঠিক পরের বছর। বস্তুত রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা যেমন বাংলার নবজাগরণের ইতিহাসে বিবিধ ধর্মীয় অভিঘাতের স্রোতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা, তেমনই সিস্টার নিবেদিতার কর্মকাণ্ডও বাংলার দেশীয় শিক্ষারীতির প্রবর্তনা, শিল্পে জাতীয়তাবাদী চেতনা এবং অবশ্যই নারীশিক্ষার নিরিখে অবশ্য আলোচ্য একটি পর্যায়।

নিবেদিতার শিক্ষাচিন্তাও বাস্তবে একটি আদর্শের প্রাণপ্রতিষ্ঠা ছাড়া আর কিছু নয়। সেই ভাবটির মূল কথা ভারতীয় চেতনা কিন্তু বৈশ্বিক বীক্ষণ। ১৯৫৪ সালে নন্দলাল বসু শান্তিনিকেতন থেকে বরেন্দ্রনাথ নিয়োগীকে চিঠিতে লিখছেন, “আর একদিনের কথা। বোসপাড়া লেনে উঁহার (নিবেদিতার) বাড়িতে আমি ও আমার সহাধ্যায়ী সুরেন গাঙ্গুলী দেখা করতে গেছি। উঁহার বাড়ির উপরতলার বসবার ঘরে আমরা দুজনে গেলাম। তখন তিনি ঘরে ছিলেন না। টেবিলের পাশে একটি লম্বা সোফার উপর পা ঝুলিয়ে বসলাম। তিনি এসে আমাদের দেখে বললেন— না, নীচে নেমে পা মুড়ে আসন হয়ে বসো। ইহাতে আমাদের মনে বড়ো আঘাত লাগল, মনে বড়ো অভিমান হল। মেমসাহেব তো, নেটিভ বলে আমাদের নীচে নেমে বসতে বললেন। আমরা তাঁর আদেশমতো পা মুড়ে বসার পরে তিনি আমাদের সামনে ওই সোফাটিতে বসে একদৃষ্টিতে আমাদের দেখতে লাগলেন। আর বললেন, You are all Buddhas. তখন আমাদের সব অভিমান চলে গেল ও তাঁর আইডিয়াটা ধরতে পারলাম।”

স্বামী বিবেকানন্দের শিষ্যত্ব গ্রহণ করার সময়েও এই নিজস্ব মাটিতে শিকড় পেতে, আকাশের প্রত্যাশায় ডালপালা মেলে দেওয়ার টানটিই তাঁকে ছুঁয়েছিল সবচেয়ে বেশি। আয়ারল্যান্ডের মার্গারেট এলিজাবেথ নোবল তখন সাংবাদিক ও শিক্ষিকা, যাঁর সম্ভাবনাময় কলম আলোড়ন ফেলে দিচ্ছে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী সমাজের অভ্যন্তরে, সমাজ, সংস্কার, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে যাঁর কূট প্রশ্ন এবং যুক্তিবাদী আলোচনার শাণিত প্রখরতা ভূয়সী প্রশংসিত হয়ে চলেছে তৎকালীন বিদ্বৎসমাজে। কিন্তু তাঁর কানে বাজল স্বামীজির সেই অমোঘ উচ্চারণ, “কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে জন্মানো ভাল, কিন্তু উহার গণ্ডির মধ্যেই মৃত্যু অতি ভয়ংকর।” অচিরেই মনেপ্রাণে আনুগত্য স্বীকার করলেন তিনি—“I had recognised the heroic fibre of the man, and desired to make myself the servant of his love for his own people.”। এরপর, চিঠিতে স্বামীজি যখন লিখছেন, “ভারতের জন্য, বিশেষত ভারতের নারীসমাজের জন্য, একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন। ভারতবর্ষ এখন মহীয়সী নারীর জন্ম দিতে পারছে না। তাই অন্য জাতি থেকে তাকে ধার করতে হবে। তোমার শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, অসীম ভালোবাসা, দৃঢ়তা, সর্বোপরি তোমার ধমনীতে প্রবাহিত কেল্টিক রক্তের জন্য তুমি ঠিক সেই নারী, যাকে আজ প্রয়োজন। তোমার মধ্যে যে বিদ্যা আছে, লোকশিক্ষা দানে যে আগ্রহ আছে, তা আজ ভারতবর্ষের বড়ো প্রয়োজন। ওদেশের শিক্ষাবঞ্চিত নারীদের শিক্ষাদানের ভার তোমায় গ্রহণ করতে হবে।”—সে-আমন্ত্রণ সাগ্রহে স্বীকার করছেন মার্গারেট। ভারতে এসে ১৮৯৮ সালের ১৩ নভেম্বর বাগবাজারের ১৬ নম্বর বোসপাড়া লেনে প্রতিষ্ঠা করছেন মেয়েদের স্কুল।

সময়টা উনিশ শতকের শেষ পর্ব। ইতিমধ্যেই স্কুল সোসাইটি, স্কুলবুক সোসাইটি গঠিত হয়েছে। ১৮৪২ সালেই কমিটি অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশনকে পুনর্গঠিত করে হয়েছে কাউন্সিল অফ এডুকেশন, যার অধীনে ১৮৫৫ সালের মধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে ১৫১টি ইংরেজি বিদ্যালয়। মেয়েদের শিক্ষাকেও ক্রমশ প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক করে তোলার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল। ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে জন ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুনের ‘ক্যালকাটা ফিমেল স্কুল’-এ ১৬ জন বাঙালি তাঁদের মেয়েদের পাঠাতে শুরু করলেন। কিন্তু বিবেকানন্দ একটু অন্য পথে হাঁটতে চাইলেন—“যেরকম শিক্ষা চলিতেছে, সেরকম নহে। সত্যিকারের কিছু শেখা চাই। খালি বই পড়া শিক্ষা হইলে চলিবে না। যাহাতে চরিত্র গঠিত হয়, নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াইতে পারে, এইরকম শিক্ষা চাই।”

নিবেদিতাও ঠিক এই চেয়েছিলেন। নিজের স্কুলে তিনি অঙ্ক, ইতিহাস পড়াতেন আর শেখাতেন ছবি আঁকা। কিন্তু ইতিহাস পড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচি ধরে বইয়ের গতে-বাঁধা ছকে চলেননি কোনোদিন। তাঁর ছাত্রী নির্ঝরিণী সরকার জানিয়েছেন, “সাধারণ স্কুলের মতো পাঠ্যপুস্তক দ্বারা ইতিহাস পড়াতেন না, তিনি নিজেই ইতিহাসের গল্প বলে যেতেন, আমরা শুনতাম, এক-একদিন এক-একটি বিষয় নিয়ে তিনি আরম্ভ করতেন এবং সেই বিষয়ের ভিতরেই যেন ডুবে যেতেন।” সেই ইতিহাসে থাকত রাজপুত শৌর্যগাথা, আলেকজান্ডার ও পুরুর কাহিনি, প্রতিবাদী ধর্মচেতনার প্রসার, ভারতীয় মহাকাব্যের ধারা। শুধু চার-দেয়ালের ভিতরে আউড়ে-যাওয়া বক্তৃতাতেই আটকে থাকেননি তিনি, বাগবাজারের সেই গলিপথের আটপৌরে বাড়ির মেয়েগুলি তাঁর হাত ধরেই চিনেছিল ভারতীয় জাদুঘর, পেয়েছিল শিক্ষামূলক ভ্রমণের পাঠ। নিজস্ব সংস্কৃতির ইতিহাস সম্পর্কে মেয়েদের ভাবিয়ে তোলার আর-এক আশ্চর্য আয়ুধ ছিল তাঁর শিল্পশিক্ষার ক্লাসটি। ঠিক যে আবেগ আর সচেতনতার মিশেলে দেশীয় শিল্প পুনরুদ্ধার প্রসঙ্গ তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল এবং ‘বেঙ্গল স্কুল অফ আর্ট’-এর পৃষ্ঠপোষণার পুরোধা হয়ে উঠেছিলেন তিনি, সেই একই দায়িত্ববোধ নিয়ে সংগ্রহ করে রাখতেন মেয়েদের আলপনা, মাটির ছাঁচ, মাটির বেনেপুতুল, পুরোনো কাশ্মীরী শালের কাজ কিংবা কাঁথার কারুকার্য। বাঙালি মেয়েদের অন্দরমহলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে মুক্তি দেওয়ার ভাবনাও তাঁর স্কুলের শিক্ষাক্রমে এসেছে বারবার। ছাত্রীদের স্মৃতিচারণ থেকে জানা যায়, তাদের স্কিপিং করার সময়ে দড়ি কম পড়লে কতদিন আদরের ‘সিস্টার’ নিজের পোশাক থেকে কোমরের দড়িটি খুলে তাদের দিয়ে দিতেন।

একদিকে তাঁর পরিচয় ও সখ্য ছিল তৎকালীন বাংলার এলিট শিক্ষিত সম্প্রদায়ের সঙ্গে, অন্যদিকে বাঙালি মেয়েদের নিজস্ব দিনযাপনের ভঙ্গিটির মধ্যেও সরাসরি ঢুকে পড়েছিলেন তিনি—একাদশীর পরদিন স্কুলের বিধবা উপবাসী মেয়েদের আলাদা করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা, স্কুলশেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই মেয়েদের জন্য কথকতার আসর বসানো—সবই করতেন আশ্চর্য মমতায়। উনিশ শতকে মেয়েদের বিদ্যাচর্চা নিয়ে ভাবনাচিন্তার যে নবতর তরঙ্গের অভিঘাত বাংলায় এসে লেগেছিল, নিবেদিতার শিক্ষাচিন্তা সেইসবের চেয়ে স্বতন্ত্র ঠিক এইখানটিতেই। বাইরে থেকে আমদানি-করা ঔপনিবেশিক শিক্ষার অনুকরণে নয়, নিজস্ব মৌলিকতার উদ্ভাসনটুকুকে বজায় রেখেই শিক্ষার আলোর প্রকৃত দাবিদার হয়ে উঠুক মেয়েরা—এই ছিল তাঁর লক্ষ্য।

তাঁর এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে বিবেকানন্দ পরিকল্পিত নারীপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের সম্পর্কটি যে বিশেষ যোগসূত্রে গাঁথা, তা বোঝা যায় নিবেদিতার ছাত্রী সরলাবালা সরকারের লেখা থেকে—“বোসপাড়ার একটী ছোট বাড়ীতে নিবেদিতা ও ক্রিশ্চিয়ানা একত্রে থাকিতেন, ঐ বাড়ীতেই মেয়েদের পাঠশালাও বসিত। সাধারণ হিসাবে বিদ্যালয় বলিলে যাহা বুঝায় এই বিদ্যালয়টী সেরূপ ধরণের নহে, স্বামী বিবেকানন্দ ব্রহ্মচারিণীগণের জন্য মঠ প্রতিষ্ঠার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন, ঐ সঙ্কল্পকে ভিত্তি করিয়াই নিবেদিতা এই বিদ্যালয়ের স্থাপনা করিয়াছিলেন। এই বিদ্যালয়ের কার্য্যেই নিবেদিতা তাঁহার জীবন উৎসর্গ করিয়াছিলেন, এবং এই বিদ্যালয়ের কার্য্যেই তাঁহার জীবনদানও করিয়া গিয়াছেন। বোসপাড়ার একটী ছোট গলি, তাহার ভিতর একটী ক্ষুদ্র বিদ্যালয় এবং নিবেদিতার ন্যায় অসাধারণ প্রতিভাশালিনী একান্ত নিষ্ঠাব্রতাবলম্বিনী রমণী, যাঁহার পক্ষে পৃথিবীতে কোন কার্য্যে সফল হওয়াই অসম্ভব ছিল না,—নিবেদিতা তাঁহার সমস্ত জীবন ঐ ক্ষুদ্র বিদ্যালয়ের জন্য দান করিয়া গিয়াছেন, একথা শুনিলেই প্রথমে আশ্চর্য্য হইতে হয়।” এমনকি, নিবেদিতার মৃত্যুর পরে, সারদা মিশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত এই বিদ্যালয়টির কার্যপ্রণালি সরাসরি নিয়ন্ত্রিত হত রামকৃষ্ণ মিশনের অধীনে। সেই ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করেই, আজও বিদ্যালয়টির মূল নাম ‘সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুল’-এর শুরুতেও জড়িয়ে আছে ‘রামকৃষ্ণ সারদা মিশন’ শব্দবন্ধটি।

এই বিদ্যালয়টি বর্তমানে সারদা মিশনের অধীন। কিন্তু সরাসরি রামকৃষ্ণ মিশনের আওতায় থেকে কার্যপ্রণালী পরিচালনা করা হয়, এমন বেশ কিছু মেয়েদের বিদ্যালয়ও রয়েছে। ১২৫ বছরের উদ্‌যাপনের আড়ম্বরে মেয়েদের বিদ্যালয়গুলির সেই ইতিহাস কিন্তু বেশ ফিকে হয়েই আড়ালে পড়ে রইল! বস্তুত রামকৃষ্ণ মিশনের অধীন কোনো মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কিংবা মেয়েদের মিশন সম্পর্কে প্রতিনিধিত্বমূলক কোনো স্বীকৃতির ছবিই দেখা গেল না এই আলোয়, এতটা বিস্মৃতিকে অনবধান বলে মেনে নিলে স্বস্তি মেলে ঠিকই, তবে বৈষম্যের দায় তাতে এড়ানো যায় না।

0 Comments

Post Comment