পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

কারা দেশদ্রোহী? দেশপ্রেমিকই বা কারা?

  • 24 December, 2025
  • 0 Comment(s)
  • 434 view(s)
  • লিখেছেন : আজমল হুসেন
যে ব্যক্তি এক সময় কলকাতায় দক্ষিণপন্থী মিহির সাহার হয়ে ভোটের ক্যাম্পেন করতেন আর ফলাফল ঘোষণার পর হতাশ হতেন, আজ তাঁর হতাশার কারণ সম্পূর্ণ বিপরীত। দেশদ্রোহ আর দেশপ্রেমকে ঘিরে চিরাচরিত দ্বন্দ্ব আর আনুষঙ্গিক বিষয় হিসেবে তাঁর হতাশার সেইসব কারণই লেখক প্রসঙ্গক্রমে একাধিকবার দর্শানোর নীতিনিষ্ঠ প্রয়াস চালিয়েছেন এই ‘আপনি কি দেশদ্রোহী?’ বইটাতে।

গত বছর সংসদীয় নির্বাচনের সময় হিন্দি বলয়ের নিয়ন্ত্রিত আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সহকর্মী ভোট দেওয়ার জন্য তাঁদের বরাদ্দ ছুটি পাননি। তাঁদের একজন আমার কাছে এই ব্যাপারে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করাতে আমি তাঁকে বললাম, ‘হয়তো কর্তৃপক্ষ ভেবেছেন যে বাংলার শিক্ষিত সমাজে যাঁদের ওঠাবসা রয়েছে তাঁরা বিজেপিকে ভোট দেবেন না, তাই ছুটি মঞ্জুর করেননি।’ তাঁর তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া -  ‘তাহলে তাঁরা ভুল ভেবেছেন, কারণ সুভদ্র সুশিক্ষিত মানুষ বিজেপিকেই ভোট দেবেন।’ আমি নতুন করে বুঝলাম যে আমি নেহাতই মূর্খ ! ভাগ্যিস…। তবে মুখে কিছু বলার জো নেই, বললেই ‘দেশদ্রোহী’ তকমা জুটবে।  


সম্প্রতি পূর্বোত্তর ভারতের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাঙালির প্রাণের ঠাকুর রবিন্দ্রনাথ রচিত ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি…’ গানটা গাওয়ার জন্য এক বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা করার নির্দেশ দেন। ঘটনাচক্রে অসম্ভব জনপ্রিয় এই রবীন্দ্রসঙ্গীত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, আর সেই কারণেই ভারতবর্ষে থেকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের এই গানটা গাওয়া নাকি দেশদ্রোহীতা। পশ্চিমবঙ্গের আরেক দক্ষিণপন্থী নেতা প্রকাশ্যে এই স্বৈরাচারীতাকে সমর্থনও করেছেন। 

      
এই দেশদ্রোহী তকমাটা কী করে সমকালীন ভারতীয় সমাজে এত সহজলভ্য হল? কারাই বা দেশদ্রোহী? সাম্প্রতিক কালের এই ঘটনা আরেকবার নতুন করে  বাঙালির মনে এসব প্রশ্ন জাগায়। আমাদের প্রশ্ন করার সাহস থাকুক কিংবা  না থাকুক, দেশপ্রেমের নামে যখন একটা বোধহীন প্রোপাগান্ডা হট কেকের মতো বিক্রির চেষ্টা চলছে, তখন এরকম কিছু প্রতিস্পর্ধী প্রশ্নের প্রয়োজন আছে বইকি। সেরকমই কিছু প্রতিস্পর্ধী প্রশ্ন রেখেছেন মানবাধিকার কর্মী তথা লেখক ডঃ পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর লেখা ‘আপনি কি দেশদ্রোহী?’ বইটাতে। যত সময় যাচ্ছে এই বইটার প্রাসঙ্গিকতা ততই বাড়ছে, বেড়েই চলেছে।    


লেখক পরিচিতির ব্যাপারে নতুন করে আর কী বলি! যে ব্যক্তি এক সময় কলকাতায় দক্ষিণপন্থী মিহির সাহার হয়ে ভোটের ক্যাম্পেন করতেন আর ফলাফল ঘোষণার পর হতাশ হতেন, আজ তাঁর হতাশার কারণ সম্পূর্ণ বিপরীত। দেশদ্রোহ আর দেশপ্রেমকে ঘিরে চিরাচরিত দ্বন্দ্ব আর আনুষঙ্গিক বিষয় হিসেবে তাঁর হতাশার সেইসব কারণই লেখক প্রসঙ্গক্রমে একাধিকবার দর্শানোর নীতিনিষ্ঠ প্রয়াস চালিয়েছেন এই বইটাতে। 

    
দাঙ্গাকে কীভাবে রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করা যায়? সবার আগে দাঙ্গা বিরোধীদের দেশদ্রোহিতার নাম করে নানা কালা কানুনের অপপ্রয়োগ করে জেলে পুরে দাও। ঠিক যেভাবে উমর খালিদ, শারজিল ইমামদের মতো অনেকেই দীর্ঘদিন বিনা বিচারে জেলবন্দী থাকেন। তারপর দাঙ্গাকারীরা যাতে অবাধে দাঙ্গা ছড়িয়ে দিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে হবে জায়গায় জায়গায়। ঠিক যেভাবে আমাদের কিশোরবেলায় উগ্র দক্ষিণপন্থীদের ডার্লিং আমাদের এক মাননীয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা ভারতরত্ন নেলি গণহত্যার আগে বেশ কয়েকটা সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন।  উগ্র সাম্প্রদায়িক সমাজের একাংশের কাছে আজও তিনি প্রণম্য। 

   
বছর কয়েক আগে নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০১৯ (CAA)-এর বিরুদ্ধে যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট-বড় অনেক শহর প্রতিবাদে উত্তাল, তখন দিল্লীতে জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী তথা যুবনেতা উমর খালিদ তাঁর বক্তব্যে মানুষকে সতর্ক করতে চেয়ে দাঙ্গাবাজদের প্ররোচনার ফাঁদে পা না দিতে বলেছিলেন। তাহলে কি তিনি দেশদ্রোহী? ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই তাঁকে গ্রেফতার করে জেলে পোরা হয়।  আর অন্যদিকে বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর বুঝি দেশপ্রেমী! কারণ তিনি ওই একই সময়ে হিংসাকে উস্কানি দিতে শ্লোগান দিয়েছিলেন – ‘গোলি মারো সালোঁ কো’ 

       
‘দেশদ্রোহী তারা, যারা আমেরিকায় হিংস্র আক্রমণ করে সংসদ ভবন ক্যাপিটল দখল করে নেয়। যারা জাতীয় পতাকা ছুঁড়ে ফেলে স্বৈরতান্ত্রিক মিথ্যাচারী নারী-বিদ্বেষী সংখ্যালঘু-বিদ্বেষী দানবীয় শাসকের পতাকা উত্তোলন করে। দেশদ্রোহী তারা, যারা দেশের সম্পদ, সাধারণ মানুষের জমানো সঞ্চয় অতি-ধনিক শ্রেণীর হাতে তুলে দেয়। দেশদ্রোহী তারা, যারা মুনাফার লোভে দেশের পরিবেশ ধবংস করে দেয়, অরণ্য জ্বালিয়ে দেয়, নদীকে হত্যা করে। দেশদ্রোহী তারা, যারা ধর্মের মুখোশের আড়ালে ঘাতক সৈন্য পাঠায়, যারা মারো মারো করে হেঁকে ওঠে। আমেরিকাতেও তাই, ভারতেও তাই। রক্তের বন্যা বইয়ে দেয় তারা। তারপর তাদের মিডিয়ার সাহায্যে শান্তির বাণী প্রচার করে। একসময়ের ঘাতক রাতারাতি দেবদূতের বেশ ধারণ করে হাসির মুখোশ পরে জনতাকে আশীর্বাদ করতে আসে,’ বই থেকে উদ্ধৃত লেখকের এই পর্যবেক্ষণ আজকের দিনে খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হল, তাই এখানে দিলাম। 

 
বই থেকে উদ্ধৃত আরও কিছু  সমকালীন প্রাসঙ্গিক কথা এখানে থাকল।

‘আর দেশপ্রেমিক তারাই, যারা অহিংস গণতান্ত্রিক উপায়ে তাদের মুখোশ খুলে দেয়। যারা যুদ্ধ, হিংসা, ঘৃণা, লোভ, স্বার্থপরতা, ইন্দ্রিয়পরতা, মুনাফা ও শঠতার রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করে যায় । স্বাধীনতার যুদ্ধ, গণতন্ত্র রক্ষা করার যুদ্ধ, মুক্তচিন্তা ও প্রগতিশীলতার যুদ্ধ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমানাধিকারের যুদ্ধ। কর্পোরেট মিডিয়ার মগজধোলাইয়ের  বিরুদ্ধে যুদ্ধ। হীরক রাজার দেশে গিয়ে উদয়ন পণ্ডিতের পাশে দাঁড়িয়ে দড়ি ধরে তারা রাজার মূর্তি টেনে ভেঙে ফেলে। যারা হিংসার বিরুদ্ধে, ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসার, বন্ধুত্বের, সহমর্মিতার কথা বলে।’ 

   
পক্ষান্তরে, শাসকের পেটোয়া মিডিয়ার মগজ ধোলাইয়ে প্রভাবিত না হয়ে আপনি যদি একজন রাজনৈতিক নেতার সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ঘৃণা-ভাষণের বিরোধীতা করেন তাহলে আপনি দেশদ্রোহী, আর চুপচাপ থাকলে দেশপ্রেমিক হলেও হতে পারেন। তবে এইসব সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ঘৃণা-ভাষণের পক্ষে কথা বললে এটা আপনার দেশপ্রেম! আপনার এই অন্ধভক্তিতে যত বেশি উন্মাদনা থাকবে আপনি তত বড় দেশপ্রেমিক, যদিও এই সাইকোফ্যান্সির সঙ্গে দেশ কিংবা প্রেম কোনোকিছুরই সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি নিয়ে আপনি যদি কথা বলেন তাহলে আপনি দেশদ্রোহী, আর চুপচাপ থাকলে কিংবা আড়াল করার চেষ্টা করলে দেশপ্রেমিক। বিরোধী দল-দ্বারা চালিত রাজ্য সরকারের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের অনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও সেই সরকারের কাজে বিঘ্ন ঘটাতে প্রতিনিয়ত সেইসব রাজ্যের সরকারকে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত রাখলে যদি আপনি কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় মুখর হন তাহলে আপনি দেশদ্রোহী, আর চুপচাপ থাকলে কিংবা সমর্থন করলে দেশপ্রেমিক।  

  
আমি বলি, একজন প্রকৃত দেশপ্রেমী দেশের ভালোমন্দ বিচার করার চেষ্টা করেন। তাঁর দেশপ্রেম কখনো প্রতিবেশী দেশের প্রতি অন্ধ বিদ্বেষ দিয়ে মাপা হয় না। নিজের দেশের প্রতি তাঁর ভালবাসা কাঁটাতারের সঙ্কীর্ণতায় থমকে যায় না। প্রকৃত দেশপ্রেমিক দেশের আলো-বাতাস, গাছপালা, জীবজন্তু, নদীনালা সবকিছুকেই হৃদয়ঙ্গম করেন। দেশের ধর্মীয়-ভাষিক-অর্থনৈতিক সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু সবাইকে হৃদয়ে ধারণ করেন। দেশের সাধারণ মানুষকে ভালোবাসেন, দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষের কল্যাণকামী হন, এবং তাঁদের কথাই সবচেয়ে বেশি ভাবেন। প্রকৃত দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রের শাসকের চাটুকারিতা করেন না, উল্টে শাসকের কার্যকলাপের দিকে কড়া নজর রাখেন। শাসকের কর্তব্যচ্যুতি দেখলে চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করেন। প্রকৃত দেশপ্রেমিক দেশের স্বার্থকে কোনঠাসা করে শাসকের স্বার্থকে বড় করে দেখে্ন না । প্রকৃত দেশপ্রেমিক দেশের স্বার্থ আর শাসকের স্বার্থ এই দুটো বিষয়কে গুলিয়ে দিতে চান না। দুটোর তফাৎ বোঝার মতো মন কেবলমাত্র সত্যিকারের দেশপ্রেমিকেরই থাকে, শাসকের তল্পিবাহকদের থাকে না ।  দেশপ্রেমের বিষয়ে আমার এই ধারণা বইটা পড়ার পর যেন পূর্ণতা পায়, আর এর বিপরীত অবস্থানে থাকা দেশদ্রোহিতার ব্যাপারে ধারণাটা আরও পরিষ্কার হয়। 

      
দেশপ্রেম-দেশদ্রোহিতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক আরও বেশ কিছু আনুষঙ্গিক প্রশ্নের যুক্তিনিষ্ঠ উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। চরম দক্ষিণপন্থার বিশ্ব জোড়া সাফল্যের চাবিকাঠি কী? বিংশ শতাব্দীর আরএসএস আর আজকের আরএসএস-এর মধ্যে তফাৎ ঠিক কোথায়?  এইসব বিষয়েও যথাসাধ্য তথ্যনিষ্ঠ বিশ্লেষণ সহ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যথেষ্ট ঘাম ঝরিয়েছেন লেখক। কোন যাদুমন্ত্রে একদা হাস্যকর বিজেপি আজ সারা দেশে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি, এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও এক প্রবল শক্তি? সোশ্যালিজমের বিরোধীরা কীভাবে সরকারি সামাজিক উদ্যোগের সুযোগ সুবিধা নিতে তৎপর থাকেন? যাঁরা এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চান, বা উত্তর জানা থাকলেও যাঁরা নিজস্ব ধরণাকে নতুন করে ঝালিয়ে নিতে আগ্রহী, এই বইটা তাঁদের জন্য অবশ্যপাঠ্য। 

        
অন্ধ ভক্তরা যখন সারা ভারতে 'হিন্দু খতরে মে হ্যায়' বলেন, তখন একটা কথা গভীরভাবে ভেবে দেখতে হয় বইকি। 'হিন্দু খতরে মে হ্যায়!' সে তো বটেই, বিশেষ করে যখন যে কোনো দুর্যোগে মৃতরা দেশের জনসংখ্যার সমানুপাতে প্রায় আশি শতাংশই হিন্দু। হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের ভয়াবহ ল্যান্ডস্লাইডে ক্ষতিগ্রস্ত কারা হয়ে থাকেন? হিন্দু না অহিন্দু? হালেই ওড়িশায় যাঁদের পুরো গ্রাম পুড়িয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হল তাঁরা হিন্দু না অহিন্দু?  যে সকল দলিতের গণহত্যা হয় রনবীর সেনার হাতে, তাঁরা কি হিন্দু নন? নাকি তাঁরা কেবলই ভোটব্যাঙ্ক সর্বস্ব মুসলমান-বিদ্বেষের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার-যোগ্য রাজনৈতিক পুঁজি? তাঁরা কি কেবলই ভোটব্যাঙ্ক হিন্দু? এরকম অগণন প্রশ্ন স্ববিরোধী এবং আত্মঘাতী অন্ধ ভক্তি তথা অন্ধ বিদ্বেষের আড়ালে বরাবর ঢাকা থাকে। 

 

            
কতিপয় নাগরিক শাসকের প্রতি অন্ধ আনুগত্যকেই দেশপ্রেম বলে দাবি করেন। কেউ কেউ আবার প্রতিবেশী দেশে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের প্রতি বিদ্বেষ জাহির করে বোঝাতে চান তাঁরা কত বড় দেশপ্রেমিক। এদের প্রেমটা কি ঠিক দেশের প্রতি? না প্রতিবেশী দেশের প্রতি তাঁরা যে দ্বেষ মনের মধ্যে পোষণ করেন, সেই  দ্বেষের প্রতি প্রেম? ভেবে দেখতে হবে। ভাবতে হলে বুঝতে হবে। বুঝতে হলে জানতে হবে। জানতে হলে পড়তে হবে। পড়তে হবে পার্থ বন্দোপধ্যায়ের বই - ‘আপনি কি দেশদ্রোহী?’

0 Comments

Post Comment