পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

ওপার হতে

  • 22 November, 2020
  • 0 Comment(s)
  • 1318 view(s)
  • লিখেছেন : উপাসনা সরকার
এখানে বাতাসে বিষ নেই। শহর থেকে দূরে। চিমনির কালো ধোঁয়া,গাড়ির আওয়াজ কিচ্ছুটি নেই। রান্নাঘরের তাড়াও নেই। মনে পড়ল,আজ ধ্যানের ক্লাস আছে। নিয়ম মেনে। ঘন্টা খানেক। সবই নিয়মের। মেনে চলেন। মানিয়ে চলেন। জীবন। নতুন বাড়ি। নতুন পরিবার!

ঠান্ডা লাগছে হালকা।গায়ে পাতলা চাদর থাকা সত্ত্বেও।পাখির ডাক।কয়েকটা চিনতেও পারলেন বেশ।শালিখ,ঘুঘু।বুলবুলি,ময়না।ফিঙে।একটানা ঝিঁঝিঁর শব্দ।সামনেটা জঙ্গলের মত।ঠিক জঙ্গল নয়,তবে ঘন গাছ।সোনাঝুরি।হলুদ হয়ে এসেছে পাতা।ঝরে যাবে কদিন পরেই।অদ্ভুত একটা গন্ধ পাচ্ছেন।সেই ছোটবেলার মতন..

বিয়ের পর বহুবছর ছিলেন জামশেদপুরে।কর্তার চাকরি,ছেলেমেয়ের স্কুল।নাওয়া খাওয়ার সময় থাকতনা।কত শত কাজ।সন্ধে নাগাদ টিভিতে চিত্রহার, বুনিয়াদ।সময় বার করে ছুটি ছাটায় বাপের বাড়ি।দাদা,বৌদি,ভাই,ভায়ের বউ,মাসীরা।বড় সংসার,গল্প জমে উঠত কত!দেশি মুরগির ঝোল,কিমা কলেজি,টমেটো সর্ষের চাটনি।বিহারি স্বাদের বাহারি রান্না।লোকে বলত,প্রবাসী বাঙালি।ছেলেপুলেরা মনের সুখে বাগানে ঘুরত।পুকুরে ঝাঁপাত।ওই ভাবেই সাঁতার শিখল সকলে।তখন আর সুইমিং পুল কোথায়!

পিকু,আদি,শঙ্কু,তিতলি।ওদিকে সাবু, রিঙ্কি, পমপম,কোলু।কী রেগে যেত কোলু!গায়ের রং কালো ছিল বলে আদর করে নাম দিয়েছিলেন বড় পিসীমা।বড় হতেই টের পেয়েছিল নামের মহিমা।আর যায় কোথায়!সবাই এখন দূরে দূরে।ম্যানহাটন থেকে ম্যানচেস্টার।ক্যানবেরা থেকে কুইন্সল্যান্ড।মাঝে মাঝে দু একটা টেলিফোন।ভিডিও কল।দায়বদ্ধতা।দায়মুক্তি।মনে পড়ে পুজোর পর একতাড়া পোস্টকার্ড নিয়ে বসতেন।কলকাতা,রাঁচি, পাটনা। বোঝাই সব স্মৃতি।যেন তাকে তাকে সাজানো।রোজ ধুলো ঝাড়বেন,মুছবেন।শীতের রোদ খাওয়াবেন।

চমকে উঠলেন ছুটকির আওয়াজে।ডাকছে।বেশ জোরে।আগেও কী ডেকেছে?টের পাননি।আজকাল ছুটকিকে বেশ ভয়ই পান।শাসন,বকা ঝকা।ছুটকি আর সেই ছোটট্টি নেই।দেখতে দেখতে সেও পঁয়ষট্টি পেরোল।ছোটবেলায় কী যে উৎপাত ছিল ওর!কিন্তু ছোট বলে পার পেয়ে যেত বরাবর।মা বরং ওর ভাগের কিল দুটোও স্বাচ্ছন্দ্যে বড় মেয়েকে উপহার দিতেন রোজ!মা!কী অপূর্ব রং ছিল মায়ের।দুধে আলতা।তেমনি চুল।ছুটকি রংটা পেয়েছে খানিক।তবে পুরোটা নয়।

"তুই ঠান্ডাটা ফের লাগাবি দিদি।বাড়াবাড়ি করিস না"

আঁচ, ঝাঁঝ দুইই টের পেলেন অনুরাধা।সত্যিই তো,ভুল কিছু বলেননি।শীত পড়লেই পুরোনো কাশি,বাতের ব্যথা।হাঁপানির টান।সারা রাত বালিশে হেলান।ছুটকিই সামলায়।অন্তত এতদিন।নিয়ম মাফিক।ভাল লাগেনা অনুরাধার।কেমন বাড়তি ওজন নিয়ে ঘাড়ে চেপে বসেছেন যেন।সব থাকতেও।সব!কী অবশিষ্ট আছে ওঁর?বাড়ি,গাড়ি,মায়ের দেয়া শেষ কানের দুল টুকুও যখন..

(২)

"নতুন বাড়ি বুক করে দিলাম মা"..আনন্দে জড়িয়ে ধরেছে পিকু।জাপটে।এত বড় ছেলে।তাও যেন বড়টি হয় না কিচ্ছুতেই।সব তাতেই মা মা মা।খুশিও হন মনে মনে।অন্যদের ছেলেরা কই এত মা মা করে না তো!সবই তো দূরে।বৌদের কোল ধরা।মা আর বউয়ের মাঝে হিমশিম খাচ্ছে নিত্যদিন।সবই টের পান।মুখ ফুটে বলেন না।এর নিন্দা,ওর নামে চুগলি কাটা করেননি কোনদিন।আঁতে লাগে।কেমন যেন কলতলার কারবার মনে হয়।সারাজীবন এড়িয়ে গেছেন।অনুষ্ঠান বাড়ি,পুজো আচ্চা যেখানেই দেখেছেন গজল্লা,কূট কাচালি, উঠে গেছেন ঝটপট।ছেলে মেয়ে নিয়ে গর্বও খুব।মেয়ে বড়।বিয়ে করে হায়দ্রাবাদ।মেয়েও হয়েছে একটি।নাম রেখেছেন পরি।সেও তো প্রায় বছর দেড়েক।জামাই একটি কলেজে পড়ায়।ব্যস্ত মানুষ।মোটামুটি সব মিলিয়ে সুখের সংসারই অনুরাধার।ছায়া রোদ্দুর।দুঃখ একটাই,কর্তা সব দেখে যেতে পারলেন না।হুট করেই ঘুমের মধ্যে...

পিকু লাফাচ্ছে আনন্দে।অনুরাধা জোর করে হাসি চাপলেন।স্বপ্ন কী নিজেও দেখেননি।বড় ফ্ল্যাট,গোছানো সংসার,ছেলের বউ,নাতি নাতনি।মেয়ে তো দূরের।ছেলে তো কাছে থাকবে।জানালা দিয়ে দেখবেন শহরটাকে।উঁচু উঁচু বিল্ডিং,নীল আকাশ,উড়তে থাকা মেঘ,দূরের সবুজ।চোখ ঝাপসা হয়ে আসে আনন্দে।ইতিমধ্যেই পিকুর প্রমোশন হয়েছে দুবার।গাড়িও বুক করেছে।অবশ্য,তার জন্য নিজের ভারী হারটা।প্রায় আড়াই ভরি।পিকুর বউয়ের জন্য রেখেছিলেন।শাশুড়ির দেয়া।শেষ চিহ্ন।একটু যেন বুকের মধ্যে ভারী লাগল অনুরাধার।পিকু যদিও বলেছে,"কাজেই তো লাগছে মা।একটা গাড়ি থাকলে কত সুবিধা বলতো!আর কোন মেয়ে এসব হেভি জুয়েলারি পরে আজকাল।সবই তো লাইট ওয়েট।গাড়ি নিয়ে আমরা মাঝে মাঝে বেরিয়ে পরব মা।এই ধরো,শান্তিনিকেতন,বিষ্ণুপুর।তুমি যেমন ভালবাসতে।আগের মতন"..আনন্দে চোখে জল এসে যায় অনুরাধার।পিকু এত বড় হয়ে গেছে।এত খেয়াল রাখতে শিখেছে মায়ের!

(৩)

কেয়ারটেকার এসে খাবার দিয়ে গেল।পাতলা পরোটা,সাদা আলুচচ্চড়ি।কালোজিরে দেয়া।ছিমছাম।অবশ্য গেস্টহাউসটা এরকমই বরাবর।সিঁড়ির ধাপে ধাপে সাদা বড় বড় পেঁচা রাখা।কাঠের।বেশ বড়।বাগানে সদ্য লাগানো গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা,ডালিয়া।কদিন পরে ফুল হবে।ভরে যাবে চারপাশ।উজ্জ্বল।জামশেদপুরে বাগানের শখ ছিল অনুরাধার।মাটি কুপিয়ে কুপিয়ে তৈরি করতেন।কর্তা জোগাড় করে এনে দিতেন সব।বিরক্ত হননি কোনদিন।চুপচাপ ইজিচেয়ারে বসে থাকতেন কাগজ মুখে দিয়ে।কখনো মুখের সামনে ধরতেন চায়ের কাপ।খুব অল্প মিষ্টি দিয়ে।অনুরাধার মা বলতেন,"শিবের মত বর।অনুর আমার ভাগ্য করে বর জুটেছে"।

ছুটকি খেয়ে স্নানে গেল।পাক্কা এক ঘন্টা ধরে স্নান করবে এবার।এই ওর বাতিক।মায়ের থেকে এই গুণটি পেয়েছে ছোট মেয়ে।মেজাজও।উচিত কথা বলতে পারে।মুখের ওপর।অনুরাধা সেই তুলনায় নরম,দুর্বল।সেই জন্যই কী??আজকাল নিজেকেই দোষ দেন অনুরাধা।সময় পেলেই গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসেন।খুঁটিনাটি,হিসেব নিকেশ।ছুটকি বিরক্ত হয় বোঝেন।এসব ভেবে ভেবে অসুস্থ হয়ে গেলে সেই ছুটকির ওপরই বর্তাবে।মেয়ে দৌড়ে আসতে পারবে না।বড়জোর ফোনে দুটো কথা।কিছুটা আশ্বাস,কিছুটা বকুনি।সেও যেন লজ্জায় মরে আছে।অতগুলো গয়না..

আর ভাবতে পারেননা অনুরাধা।মাথা টিপটিপ করে।অপমানের পর অপমান।পালিয়ে বেড়ানো।এসব ভেবেছিলেন কোনদিন?স্বপ্নেও?

(৪)

ছেলে মেয়ে দুইই মানুষ করেছেন আনন্দে।পমপম এসেছিল বিয়ের পর পরই।পিকু বরং একটু দেরি করে।প্রি ম্যাচিউর।যত্নে রাখতে হত বেশি।তুলোয় মুড়িয়ে।একটুতেই হাঁচি,কাশি,সর্দি।সিজন চেঞ্জের জ্বর।যতটা পারতেন ঘরোয়া চিকিৎসা করেছেন।তুলসীর রস,মধু,আদা, বাসক।ছেলে কড়া ওষুধ খেতে পারতোনা কিছুতেই।কত রাত যে জেগে কাটিয়েছেন দুশ্চিন্তায়..

দরজায় নক নক শুনে একটু অবাকই হলেন।এত রাতে!পিকু কাজের চাপে সাত দিন অফিসেই পড়ে আছে।পরপর দুটো প্রমোশন।কাজের চাপ বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।দেখলে কষ্টও হয়।হাড়ভাঙা খাটুনি।চোখের তলায় কালি।কী যে খায় রোজ!বাড়িতে থাকলে তাও বকে ঝকে দু গাল জোর করে খাইয়ে দেন অনুরাধা।সিগারেট খাওয়াটাও বেশ বাড়িয়ে দিয়েছে পিকু।পরশুদিন হাঁটতে গিয়ে ছাদে রাখা পুরোনো মগের মধ্যে দেখেছেন।এত্ত জমেছে।আসুক এবার বাড়ি।এত চাপ নিলে চলবে কী করে!কর্তাও সারাজীবন উঁচু পদে ছিলেন।সংযমী, মাপা।অবশ্য পিকু মায়ের কথা নস্যাৎ করে দেয় এক নিমেষে।"বাবাদের সময় আর এখনকার সময় আলাদা মা।ব্রেন স্টর্মিং সেশন চলে।বাদ দাও।আমি বুঝে নেব।"

(৫)

হেমন্তের পাকা ধান।মাঠ ভর্তি।কার্তিকের হিম।অগ্রহায়ণ পড়লেই নবান্নের তোড়জোড়।বনতুলসীর ঝোঁপ এদিকে খুব।কাকতাড়ুয়া চোখে পড়ল দু তিনটে।মাথায় ঝুঁটি বুলবুলি।"বুলবুলিতে ধান খেয়েছে,খাজনা দেবে কীসে!"হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে বাচ্ছাগুলো।এ ওর ঘাড়ে।সবই তো পিঠোপিঠি।এতগুলো ভাইবোন অনুরাধারা।তাদের এতগুলো বাচ্ছা।জমজমাটি বাড়ি।হা পিত্যেশ করে বসে থাকতেন গরমের ছুটির জন্য।সেলাইয়ের খাতা,রান্নার ডায়েরি।কত যে সব আলো মাখা দিন!ছুটকি হাত চেপে রেখেছে শক্ত করে।অনুরাধা জানেন,বোন ভিতরে ভিতরে কতটা ভেঙে পড়েছে।ওর সায় নেই।তবু অনুরাধাকে পারতে হবে।শুনলেন তো এতদিন সবার কথা।দু হাতে সামলালেন।আর কী!এবার ছুটি।লম্বা ছুটি।শান্তির ঘর।লম্বা বারান্দা।কালী পুজোর চাঁদার জন্য বাচ্ছাগুলো টোটো থামিয়েছে।মাড়ি বার করে হাসছে।এই হিমের দিনেও গায়ে শুধু পাতলা একটা গেঞ্জি।চোখে অদ্ভুত মায়া!ঠিক,ঠিক যেন...গলার কাছে পাকিয়ে উঠল একবার।চোখে অন্ধকার।ছুটকির কাঁধে মাথা রেখে কোনমতে বললেন.."বাড়ি যাব"...

(৬)

"আপনি পিনাকী চ্যাটার্জ্জীর মা?বাড়ি আছেন উনি"..থতমত খেয়ে গেলেন অনুরাধা।পুলিশ কেন?এত রাতে?পিকুর খোঁজে?সামনের ফ্ল্যাটের মিসেস সামন্ত ততক্ষণে উঁকিঝুঁকি।স্বভাব।সব খোঁজের দরকার।সব ফ্ল্যাটের।সারা বাড়ির।

"না,মানে, পিকু তো অফিসে।প্রায় পাঁচ দিন বাড়ি আসেনি।কী হয়েছে ওর?"গলা কাঁপছে অনুরাধার।সামলাতে পারছেননা নিজেকে আর!

"ওর আবার কী হবে।ফ্রডগিরি করে তো ভালোই কাটাচ্ছে দিন।নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে আপনার ছেলে।কিছুই কী খবর রাখেননা?এই ফ্ল্যাটটাও আস্ত আছে না গেছে?বজ্জাত ছেলে একেবারে।বাড়ি এলেই থানায় খবর দেবেন।"

মাথা ঘুরে পড়ে গেছিলেন প্রায়।পিকু!এসব আদৌ সত্যি!ওমন শান্ত, সুন্দর ছেলে!দীর্ঘ ইতিহাস নাকি।পাঁচশো,হাজার,দশ হাজার,পঞ্চাশ হাজার।কখনো ফ্ল্যাট বুক,কখনো গাড়ি,কখনো এন জি ও,কখনো মায়ের সার্জারি!জালিয়াতি,লোক ঠকানো।ফোন সুইচড অফ।অফিস থেকেও নাকি এই অভিযোগেই....

খবর পেয়েছিলেন বেশ কিছুদিন পর।কোথাও কোন গেস্ট হাউসে পড়ে আছে দীর্ঘদিন।তার আগে নিজের লকারে রাখা গয়নার বাক্স দেখেছিলেন খালি।শাঁখা, পলা বাঁধানো,ওর বাবার বোতাম,গলার হার এমনকি দিদির বিয়ের কিছু গয়নাও যা রেখে গিয়েছিল মায়ের জিম্মায়, ভরসায়!

এমনকি দরকার,এমন কোন চক্র, এমন কোন নেশা..নাহ,খবর পাননি।অতলে তলিয়ে গেছে যে,তাকে খুঁজে বার করা কঠিনই শুধু নয়,দুঃসাধ্য।মুখ দেখাতে পারেননি।লজ্জা হত।নিজের।শুধু নিজের।নিজের শিক্ষার।নিজের সততার।লোকের তিরস্কার,কটুক্তি, বক্র উক্তি!পুলিশ যদিও খুঁজে বার করেছিল ঠিকই।লোকাল থানা থেকে কোর্ট।কোর্ট থেকে জামিন।লম্বা প্রসেস।পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছিল,যখন শুনলেন....

(৬)

লম্বা বারান্দা।পরপর অনেকগুলো ঘর।ফিকে নীলচে পর্দা।বারান্দায় দাঁড়ালেই গঙ্গা।ওদিকটায় ঠাকুর মন্দির।রাধা কৃষ্ণের।ফুল গাছ।বেল,জুঁই,দোপাটি।পরিষ্কার,পরিচ্ছন্ন,নির্ঝঞ্ঝাট।ওই দিকে ঘোষদা দেখে হাত নাড়লেন।কাগজ পড়েন খুব।কথা বলতে ভালবাসেন।বাড়ির কথা,অফিস,বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা।অনুরাধা মন দিয়ে শোনেন।ভালোই লাগে।কত কথা যে জমে থাকে মানুষের!কথা কথা যে পাথর কঠিন!

নিঃশ্বাস নিলেন।লম্বা।এখানে বাতাসে বিষ নেই।শহর থেকে দূরে।চিমনির কালো ধোঁয়া,গাড়ির আওয়াজ কিচ্ছুটি নেই।রান্নাঘরের তাড়াও নেই।মনে পড়ল,আজ ধ্যানের ক্লাস আছে।নিয়ম মেনে।ঘন্টা খানেক।সবই নিয়মের।মেনে চলেন।মানিয়ে চলেন।জীবন।নতুন বাড়ি।নতুন পরিবার!

আসার সময় শুধু ওদের বাবার ছবি আর প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস নিয়ে এসেছিলেন সাথে।ফ্ল্যাটটা বিক্রি হয়ে গেছে।ছেলে যা যা ধার,যা যা চুরি..তার দায় তো মায়ের ওপরই বর্তায়।নয়তো আজীবনের ভার!মৃত্যুর পরেও...

গান গাইছেন কেউ।ওপরের ঘরের রমাদি হয়তো।সাদা শাড়ি,সবুজ পাড়।সুরেলা,বড্ড সুরেলা গলা।যেন বহুদূর থেকে..যেন ওপার হতে!

ভেসে যান অনুরাধা!

0 Comments

Post Comment