দ্বিতীয় দিন থেকেই ভয়ঙ্কর বৃষ্টিতে পথ চলা। শহরের পাকা সড়ক ছাড়িয়ে গ্রামের পথে।রোহনিয়া চকে স্থানীয় মানুষেরা স্বাগত জানালেন। এখানে ছিল গান্ধীর স্মরণে নির্মিত গান্ধী চবুতরা রাস্তা চওড়া করার নামে যা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এরপর বৃষ্টি আর বৃষ্টি। ভিজতে ভিজতে মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে সে এক অভিজ্ঞতা। দুপুরে দাউদপুর। এখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরির জন্য বহু কৃষকের জমি নেওয়া হয়েছে, ক্ষতিপূরণ নিয়ে অনেক অসন্তোষ। এখন খেল গাঁও বানাবে বলে গ্রাম উচ্ছেদের পরিকল্পনা চলছে, মানুষ আন্দোলন করছেন। সর্বত্রই মানুষের মনে উচ্ছেদ আর দখলদারির বিরুদ্ধে ক্ষোভ। সাধারণ মানুষ বিশেষতঃ মহিলারা বার বার বলছেন। বেনারস প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন ক্ষেত্র, ক্ষোভ খুবই স্পষ্ট। এখানে মহিলারা পদযাত্রীদের খাওয়ানোর জন্য চাঁদা তুলেছেন, আমাদের তরফ থেকে তাঁদের সম্মানিত করা হল।
এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন মহারাষ্ট্র অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলে সমিতির অধ্যক্ষ মাধব বাওড়ে, বিজ্ঞান চেতনার বিকাশ এবং ধর্মের নামে কুসংস্কার ছড়ানো নিয়ে তাদের আন্দোলনের কথা বললেন। নরেন্দ্র দাভোলকারের এই সংগঠনের সাথে যুক্ত সবিতা মহিলাদের বেশ কিছু কূট প্রশ্নের জবাব দিলেন। সবিতা মহারাষ্ট্রে কলেজ অধ্যক্ষা, ন্যাকের মূল্যায়ণ কমিটির সদস্যা হিসেবে কলকাতায় এসেছেন।
এই গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের অসাধারণ সাহস, কর্মদক্ষতা এবং সাংগঠনিক শক্তি খুব ভালো লাগে। হয়তো গোটা ভারতেই এরকম।
দিনের শেষে থাকা হল নাগেপুর লোক সমিতি আশ্রম। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে লোকসমিতি এখানে কাজ করছে। রয়েছে নিজস্ব স্কুল। এই এলাকা মূলতঃ বুনকরদের। দ্বিতীয় রাত এখানেই থাকা।
প্রত্যেকদিনই সকাল শুরু হয় সর্বধর্ম প্রার্থনা দিয়ে। এর যে কী অসম্ভব কল্যাণকারী প্রভাব তা ৩৫ বছর আগে সেই ভাগলপুরে দাঙ্গার পর যুযুধান দুই গোষ্ঠীর মাঝে থাকার সময় দেখেছি। বিভিন্ন ধর্মের প্রার্থনা হিন্দী অনুবাদে গাওয়া হয়। কোন্ টা কোন্ ধর্মের বলা হয় না, মূল কথাটি যে সবখানেই এক, সেটা বোঝা যায়। এর পূর্ণ বাংলা অনুবাদ শ্যামলীদির কাছে ছিল।
প্রার্থনা শেষে কবীরের ভজন গাইলেন জিতেনদা। এই যাত্রায় উনি অনেকটাই ছিলেন।
যেখানে ছিলাম নাগেপুরা, এটি নাকি প্রধানমন্ত্রীর আদর্শ গ্রাম। দিনে বহুক্ষণ বিদ্যুৎ নেই। জলে কাদায় থইথই। এদিকে এই রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার। লোক সমিতি তিন দশকের উপর এখানে কাজ করছে। চমৎকার স্কুল রয়েছে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। তাছাড়া গ্রামে গ্রামে মহিলাদের সংগঠন। আজ পদযাত্রার শুরুতে আশা সামাজিক বিদ্যালয়ের এই ছেলেমেয়েরা ছিল। কিছুদূর সাথেও চললো। আজকের প্রথম গন্তব্য মির্জা মুরাদ। পথে মুবারকপুর ও বেণীপুরে পদযাত্রীদের গ্রামবাসী স্বাগত জানালেন। পরবর্তী গন্তব্য লালপুর চৌক। এখানে মহিলারা অতি উৎসাহে স্বাগত জানালেন। উত্তরপ্রদেশে ২৭০০০ স্কুল বন্ধ হতে চলেছে। যা চলছে গ্রামাঞ্চলে তার হাল ভয়ঙ্কর। তার উপর ধর্মীয় গোঁড়ামি। মিড ডে মিলে ডিম পর্যন্ত দেওয়া হয় না।
বিকেলে পদযাত্রা পৌঁছে গেল পঞ্চায়েত ভবন, নয়াপুর সেবা পুরি। এখানে গ্রামপ্রধান সবাইকে স্বাগত জানান। পদযাত্রার অন্যতম উদ্যোক্তা অরবিন্দ আঞ্জুম বললেন এই পদযাত্রা শুধু দূরত্ব অতিক্রম নয়, মানুষের জীবন বদলের ভাবনা নিয়ে চলা।
আজ শেষ গন্তব্য ছিল বাবুসরাই। সেখান থেকে পদযাত্রীরা রাতের জন্য লোকসমিতিতেই ফিরলেন। আজ রাতে এখানকার হলে দেখানো হল অ্যাটেনবরোর গান্ধী ছবিটি। সেই স্কুল জীবন থেকে কতবার দেখেছি, দেখিয়েছি তবু। এমন সব গান্ধী জনের সাথে বসে দেখার অভিজ্ঞতাই অন্যরকম।
চতুর্থ দিন সকালে সর্বধর্ম প্রার্থনা শেষে আমরা রওনা হলাম লোক সমিতি থেকে। আজকেও খানিক ট্রাক্টর, খানিক পায়ে হেঁটে চললাম। আজ বেনারস ছেড়ে পাশের ভাদোই জেলার অড়াইতে আমাদের প্রথম গন্তব্য। সেখানে যুগ নির্মাণ সেকেন্ডারি স্কুলে আমাদের স্বাগত জানালেন স্থানীয় মানুষ এবং কিছু কথাবার্তা হল। আজ এখানে বক্তব্য রাখলেন তামিলনাড়ুর পালানিস্বামী। ওনার শারীরিক বেশ কিছু সমস্যা সত্বেও হাঁটছেন। স্মরণ করালেন দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধীর কাজের সূত্রপাত ঘটেছিল বালসুন্দরম নামক এক নির্যাতিত তামিল শ্রমিকের আহ্বানে। গান্ধী তামিল ভাষা শিখেছিলেন তামিল বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য। পালানিস্বামী বললেন গান্ধীর এক কদম লক্ষ কদমের সমান। তিনি পদযাত্রায় এসেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সমমনস্ক মানুষের সাথে পরিচিত হতে।
আজ এখানে আমিও বললাম। গান্ধীর অহিংসা এবং সত্যাগ্রহের সাথে বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করার ভাবনার কথা। ভাগলপুরের অভিজ্ঞতার কথা, দেশজুড়ে বাড়তে থাকা বিভেদ বিষের মধ্যে গান্ধীর পথই যে একমাত্র পথ, সেই কথা।
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পীযূষ বললেন বেনারস স্মার্ট সিটি ঘোষিত হয়েছে, অথচ কী সাংঘাতিক অবস্থা। ট্রাম্পের টারিফের ফলে বুনকরদের কী দুর্দশা হতে চলেছে সেটাও বললেন।
দেশের অন্যতম প্রধান হস্তনির্মিত কার্পেট রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে, ভাদোইর উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান বাজারের উপর নির্ভরশীল। পদযাত্রীরা জানতে পারলেনয যে হঠাৎ করে প্রায় ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে লক্ষ লক্ষ স্থানীয় তাঁতি ও কারিগরের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের কার্পেটের মজুদ নষ্ট হয়ে গেছে।
বক্তব্য রাখলেন সর্ব সেবা সংঘের প্রকাশনা বিভাগের অশোক ভারত। তিনি আম্বেদকরের কথা বললেন যিনি বলেছিলেন আর্থিক আর সামাজিক স্বাধীনতা না হলে রাজনৈতিক স্বাধীনতা পূর্ণ হয় না। আজ এ দেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতাও বিপন্ন। পদযাত্রার একটা বড় দিক ছিল সব মতকে স্থান দেওয়া।ফলে গান্ধীর পাশাপাশি আম্বেদকর, নেতাজী, সাবিত্রীবাঈ সবার জন্যেই জয়ধ্বনি উঠেছে।
পথে পথে লিফলেট বিতরণ করার সময় নানান কথা হল। পদযাত্রা দেখলে সাধারণের যা মনে হয়, হয় রাজনৈতিক দলের অথবা ধর্মীয় দল। আমরা কার দর্শনে চলেছি?
গান্ধীকে তো চেনেন সবাই। আর একটি কথা জানেন ইনি সবার। না শুধু হিন্দুর, না শুধু মুসলমানের। এমন ঘোর বিদ্বেষী অপপ্রচারের দিনে অন্ততঃ এই সত্যটুকু জেগে আছে।
আজ রাতে থাকা গোপীগঞ্জ আমানত ভবনে।
*
৬ অক্টোবর ২০২৫, বড় অদ্ভুতভাবে শুরু হল দিন। সকালে সর্বধর্মপ্রার্থনার পর মহারাষ্ট্র থেকে আসা শ্যামসুন্দর মিশ্রর অসুস্থতা চোখে পড়লো। তখনই হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু তিনি তার আগেই চলে গেছেন।এই মর্মান্তিক ঘটনায় সকলেই বিচলিত।
শ্যামসুন্দর মিশ্র মহারাষ্ট্রে সমাজবাদী বিচারের অন্যতম ব্যক্তিত্ব। সক্রিয় সামাজিক জীবন শুরু করেন পানিওয়ালী বাই নামে বিখ্যাত মৃণাল গোরের সাথে।পরে দূর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন, আম আদমী পার্টির গোড়াপত্তনে ছিলেন, কিন্তু পরে সরে আসেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে উনি পায়ে হেঁটে যাওয়ার বদলে ট্রাক্টরে আসছিলেন। শ্রদ্ধা রইল এই আশ্চর্য সহযাত্রীর প্রতি শত বাধা উপেক্ষা করে যিনি সঙ্গী হয়েছিলেন।
অসম্ভব এই মৃত্যুর ভার নিয়েই এগোলেন পদযাত্রিরা।এদের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে দেড় হাজার দিন ধরে লাগাতার অনশন করতে থাকা অ্যাডভোকেট বৈদ্যনাথ যাদবের সাথে যিনি কৃষকের অধিকার ও সাংবিধানিক মূল্য রক্ষার জন্য এই দৈনিক অনশন করে চলেছেন
আমরা এখান থেকেই আপাতত বিদায় নিলাম। চলে এলাম প্রয়াগরাজ। এখান থেকে ফেরার ট্রেন।
কিন্তু পথে চলার পদে পদেই তো বন্ধু। বেনারস জংশনে রাতের খাবার দিয়ে গেলেন বুনকর বন্ধু আনসারী ভাই। নব্বই থেকে উদার অর্থনীতির প্রাবল্যে এখানে বুনকরদের অবস্থা খারাপ হয়েছে, তার উপর বর্তমান সময়ে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ তো আছেই। এবারেও আনসারীর বাড়িতে গিয়েছিলাম, যেখানে চারদিকে শুধুই পাওয়ার লুমের শব্দ। হ্যান্ডলুম প্রায় উঠেই গেছে। কোজাগরী জ্যোৎস্নার আলো তবু তো ঝরে পরে। সেই পথ বেয়ে বুনকরদের ঘরেও যেন আলো আসে, এইসব ভাবতে থাকি।
পদযাত্রা এগিয়ে গেল। অনেকে ফিরলেন। অনেকে নতুন করে জুড়লেন। সবসময়েই ন্যুনতম পঞ্চাশ জন থেকেছেন। এর মধ্যে সব বয়সের মানুষ। নারী ও পুরুষ এবং তৃতীয় লিঙ্গ। যাত্রা যত এগিয়েছে সাধারণ মানুষের সাথে নিরন্তর কথাবার্তা, লিফলেট দেওয়ার মাধ্যমে বহু প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। মধ্যপ্রদেশের তরুণ শচীন সারা পথটাই ছিল। সে নিজেই বললো প্রথমদিকে অস্পষ্টতা থাকা সত্ত্বেও চলতে চলতে বহু কিছু স্পষ্ট হয়েছে। আজকে দেশের পরিস্থিতি, কর্পোরেট অত্যাচার, চূড়ান্ত সাম্প্রদায়িকতা, বেকারত্ব, জল জঙ্গল জমির উপর আগ্রাসন এ সমস্তই আলোচনায় এসেছে। আসমা মেয়েটি তার গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য। অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সে তার অনুভব তুলে ধরেছে। অলিভা, রাবেয়া এবং যে মেয়েটি ডকুমেন্টেশন এর কাজ করছিল, যাত্রা তাদের সবার আকাশ বড় করেছে। সারনাথের প্রবীণ সিস্টার ফ্লোরিন সমস্ত পথ হাঁটলেন। যাত্রার অন্যতম উদ্যোক্তা অরবিন্দ আঞ্জুম এবং তার স্ত্রী নিধি সবাইকে উৎসাহ যুগিয়ে গেছেন।
পাঁচটি ভাগে বিভক্ত ছিল যাত্রাপথ। বারাণসী থেকে এলাহাবাদ। এলাহাবাদ থেকে লখনৌ। লখনৌ থেকে ইটাওয়া। ইটাওয়া থেকে মথুরা। মথুরা থেকে দিল্লি । মথুরা তে ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর যাত্রার জন্য এই পদযাত্রা কে আটকে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই মথুরা তে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সম্ভাবনার কথা প্রচার করতে দিতে প্রশাসন রাজি নয়। যথেষ্ট প্রতিবাদ হয়। পদযাত্রা আবার এগিয়ে যায়।
২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবসে এই পদযাত্রার পরিপূর্ণতা হলো দিল্লির যন্তর মন্তরে। ১০০০ কিলোমিটার পথ ৫৬ দিন ধরে হেঁটে এলেন যাঁরা বহু চোখরাঙানিকে তুচ্ছ করে, সত্য, ন্যায়, অহিংসা, প্রেমের পথ ধরে হেঁটে এলেন তাদের সকলকে কুর্নিশ জানাতে, পাশে থাকতে এসে পৌঁছলাম একবেলার জন্য।
অসাধারণ বললেন মেধা পাটেকর ও যোগেন্দ্র যাদব। এই অন্ধকারে আলো জ্বালতে গান্ধীর ভাবনার কথা বললেন মেধা, বললেন দেশ জুড়ে সাধারণ মানুষের কি দুর্গতি চলেছে। যোগেন্দ্র যাদব বললেন হত্যা করেও গান্ধীকে মারা যায়নি। এদেশের শাসক বহির্বিশ্বে গিয়ে একথা বলতে পারে না যে সে গডসের দেশ থেকে এসেছে, তাকে বলতে হয় গান্ধীর দেশ থেকে এসেছি। তিনি বলছিলেন বন্ধ খামের উপর রাখা গান্ধীর চশমা নয়, চরকার গান্ধী নয়, এখন চাই চম্পারণের গান্ধী। গান্ধী শান্তি প্রতিষ্ঠানের কুমার প্রশান্ত বলেছেন যেখানে গান্ধীকে ভেঙে ফেলা হয়েছে, সেখান থেকেই উঠে দাঁড়িয়ে পথ চলা শুরু হয়েছে।
যে তরুণেরা এতদিন সাথে ছিল, উজ্জ্বল সেই সব ছেলেমেয়েরা আসমা, অলিভা, শচীন তাদের আশ্চর্য অনুভবের কথা বললো। তৃতীয় লিঙ্গের ট্যাঙ্ যে প্রথম থেকেই বেশ ব্যতিক্রমী, যাত্রাশেষে তারও যে বিরল অভিজ্ঞতা হয়েছে সে কথা বললো।চন্দনা পাল বলেছেন পদযাত্রা আসলে এক চলমান বিশ্ববিদ্যালয়, এর চেয়ে বড় শিক্ষা আর কোথায় পাওয়া যাবে? যাঁরা সর্বস্ব পণ করে এই যাত্রাকে নিয়ে এলেন তাদের অন্যতম রামধীরজজী নিদারুণ অসুস্থতা নিয়ে চলেছেন। প্রাণ দিতে সদাপ্রস্তুত এমন মানুষ এদেশে আর কতদিন পাওয়া যাবে?
সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শেষ হল সভা।
সকালে রাজঘাট থেকেই পুলিশের প্রহরা। যন্তর মন্তর অবধি পদযাত্রা তো আগেই নিষেধ করেছিল। বাসে যেতেও বাধা। যন্তর মন্তর এখন চারদিকে পাহারায় ঘেরা একটা অঞ্চল। বাইরে থেকে কেউ বুঝতেও পারবে না কী হচ্ছে। তবু এতসব মানুষ আজ এসেছিলেন, বিপিন ত্রিপাঠী, মণিমালা, ঝাড়খণ্ড থেকে কিরণ, মন্থন, কুমার দিলীপ, মহারাষ্ট্রের জয়ন্তজী, জ্ঞানেন্দ্র, উন্নাও থেকে দীনেশ প্রিয়মন, অশোক, ভাগলপুরের রামশরণজী, দিল্লির স্মিতা সবাই। আর ছিলেন গান্ধী নিধির সঞ্জয়দা। নতুন বন্ধু সীতামারির আফতাব আঞ্জুম ও আমন, যে ছেলেটি জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার নির্বাচিত হয়েছে। আরো কত সব আশ্চর্য জন। গান গাইছিলেন অধ্যাপক সামসুল ইসলাম যার কত বই পড়েছি আমরা।
এরই ভাগ নিতে এত পথ আসা। গান্ধীর সাথে চলার পথ তো ফুরায় না। ভালোবাসার জন্য, সমতার জন্য, বিদ্বেষহীন সমাজের জন্য আমাদের তো চলতেই হবে।