পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

পড়শি যদি আমায় ছুঁতো যম যাতনা সকল যেত দূরে: লালন সাঁই

hhhhhhhhhhhhhh

অনুপ্রবেশ এবং পরিযান নিয়ে কয়েকটি কথা ২য় পর্ব

  • 01 January, 1970
  • 0 Comment(s)
  • 203 view(s)
  • লিখেছেন : অঞ্জন ঘোষ
রাজ্য ভরে যাচ্ছে, ‘অনুপ্রবেশকারী’তে। এটি হচ্ছে বিশ্বাস, যেটি চলতে SIR আবহে খুব গতিশীল একটি বিশ্বাস। সর্বত্র ওপার বাংলার লোক বা অনুপ্রবেশকারীতে ভরে যাচ্ছে। রাজনীতিকদের কথা বাদ দিন, রাজনীতি করতে হলে বিরাট বিরাট বক্তব্য বিনা গতি নাই, কিন্তু আমরা যারা সাধারণ? তাঁদের অনেকেও তো একইভাবে ভাবছেন।

 

অনুপ্রবেশ এবং পরিযান নিয়ে কয়েকটি কথা ১ম পর্ব

 

আগের লেখার মূল প্রতিপাদ্য ছিল এবং আছে SIR টা ক্রমশঃ রাজনৈতিক বাগাড়ম্বরে পর্যবসিত হয়ে উঠছে। হয়ত লক্ষ্যটাও তাই। মানুষকে ভয় দেখাও, আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলো, ফ্যাসিবাদীদের  যা চিরাচরিত কার্যক্রম। ভয়ের মত রাজনৈতিক অস্ত্র আর নেই। আর এটাও বলেছি এবং এখনও বলে যাচ্ছি  SIR দিয়ে রাজ্যে অনুপ্রবেশের মাত্রা নির্ধারণ করা অঙ্কের নিয়মে সম্ভব নয় । SIR একটি উপযুক্ত পদ্ধতি হয়ে ওঠার  পরিবর্তে রাজনীতিকদের পাল্লায় পড়ে হয়ে যাচ্ছে rhetoric। হ্যাঁ , আমার আপত্তিটা সেখানেই। ফেসবুকে দেখলাম, একজন মন্তব্য করেছেন,  ২০০২ এর ভোটার তালিকায় ১ কোটি অনুপ্রবেশকারী ছিল। ফেসবুকের সবথেকে আকর্ষণীয় অংশ হল ‘কমেন্ট’ সেকশন। সেখানে দেখলাম, কেউ কেউ ওটাকে ২ বা ৩ কোটির ঘরে পৌঁছে দিয়েছে।  এখন যিনি মন্তব্য করেছিলেন, তিনি এটি সজ্ঞানে বললেন না অজ্ঞানে, সেটি ধরার মত কোনো উপায় নেই। ২০০২ এর ভোটার তালিকায় কত নির্বাচকের নাম নথিভুক্ত হয়েছিল, সেটি তাঁর জানা আছে? তাঁর কথা শুনে, আজ ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক অজিত  আগরকারের একটা কথা মনে পড়ে গেল। আগরকার বলেছেন, “আমরা এমন একটা টিম তৈরি করতে চাইছি যা আগামী ১৫ বছর ধরে দেশের মুখ উজ্জ্বল  করবে”। এটি সদ্য সমাপ্ত টেস্টে লজ্জাজনক হারের পরে বলেছেন। আমি তো আগের পর্বেই লিখেছিলাম, বিশ্বাস বা পার্সেপশন কে সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে রিপ্লেস করানো যায় না, কারণ বিশ্বাস অনেকসময়ই অন্ধবিশ্বাস। কেউ সন্তানহীনতার কারণে চিকিৎসকের কাছেও যান এবং ধর্মীয় বিশ্বাস মত  নৈহাটি বড়মার মন্দিরে পুজো দিতেও যান। কারও যদি দীর্ঘদিন পরে সন্তানলাভ হয় এবং তিনি যদি স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছন যে, এর পশ্চাতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোনো অবদান নেই সবটাই বড়মার আশীর্বাদ, এটাও সেইরকম। ২০০১ এর নির্বাচনের সময় পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচকের সংখ্যা ৪ কোটি ৮৬ লক্ষের কাছাকাছি। তার মধ্যে ১ কোটি  বা ২ কোটি অথবা তিন কোটি অনুপ্রবেশকারী ছিল বলেন! দয়া করে তাঁকে বলব, ২০০১ এর সেনসাস এর তথ্য দেখুন, পড়াশোনা করুন। আপনি যেটা বলছেন, সেটা ‘বড়মা’ মার্কা বিশ্বাস।

রাজ্য ভরে যাচ্ছে, ‘অনুপ্রবেশকারী’তে। এটি হচ্ছে বিশ্বাস, যেটি চলতে SIR আবহে খুব গতিশীল একটি বিশ্বাস। সর্বত্র ওপার বাংলার লোক বা অনুপ্রবেশকারীতে ভরে যাচ্ছে। রাজনীতিকদের কথা বাদ দিন, রাজনীতি করতে হলে বিরাট বিরাট বক্তব্য বিনা গতি নাই, কিন্তু আমরা যারা সাধারণ? তাঁদের অনেকেও  তো একইভাবে ভাবছেন। “অনুপ্রবেশকারীতে পশ্চিমবঙ্গ ভরে যাচ্ছে”, এটি মেনে নিতে আপত্তি নেই, যদি সেটি অঙ্কের দ্বারা প্রতীয়মান হয়, নচেৎ ধরে নিতে হবে ওই ‘বড়মা’ মার্কা বিশ্বাস।

আলোচনায় প্রবেশের আগে জনসংখ্যা সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য দেব।

(১) ২০১১ এর সেনসাস অনুযায়ী এই রাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ৯১,২৭৬,১১৫ জন।

(২) ২০২১ এ নির্ধারিত সেনসাস হয় নি, কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হিসাবে নিয়ে প্রোজেক্টেড জনসংখ্যা ২০২৫ এ দাঁড়ায় ১০.৫৬ কোটি সর্বোচ্চ ( বৃদ্ধির হার ১৪ শতাংশ হিসাবে )।

(৩ ) স্বাভাবিক প্রজনন হার বা Replacement Total fertility rate হওয়া উচিত ২.১। হিন্দুদের মধ্যে বর্তমান প্রজনন হার  স্বাভাবিকের নীচে এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাভাবিক হারের অতি  সামান্য বেশি।

(৪ ) ২০১১ এবং ২০২৫ এর তুলনা করলে দেখা যাবে হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রজনন হার স্বাভাবিক হারের থেকে কমেছে  কিন্তু এই হার হ্রাস পাওয়ার ক্ষেত্রে diminishing rate মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেক বেশি ( সারণী – ১ , রেখাচিত্র -১  )।  

তথ্যসূত্র-  

 [ক]  Ghosh, S. (2018). Hindu–Muslim fertility differentials in India: indirect estimation at the district level from Census 2011. Indian Journal of Human  Development12(1), 37-51.

[খ] (India’s Fertility Transition and Differences between Religious Groups – James & Rana / The India Forum Journal  )।

[গ] Srinivas Goli & Subhra Kriti , India Forum Journal , December , 2025.

এইখানে আমরা সারণীর মাধ্যমে NFHS এর তথ্যগুলি নিতে পারি জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রজনন হারের সম্পর্ক পরিস্কার বোঝার জন্য। 

 

সারণী -১

Total Fertility Rate বা সম্পূর্ণ প্রজনন হার ( পশ্চিমবঙ্গ )

NFHS

সার্ভে বছর

হিন্দু

মুসলমান

R-1

১৯৯২-৯৩

২.৬

 R-2

 ১৯৯৮-৯৯

২.৪

৩.৬

 R-3

 ২০০৫-০৬

১.৯

২.৮

 R-4

 ২০১৫-১৬

১.৬

২.৪

R-5

২০১৯-২১

১.৬

২.১

NFHS – ন্যাশনাল ফ্যামিলি সার্ভে, R-1, R-2 – রাউন্ড ১, রাউন্ড ২ ইত্যাদি।

রেখাচিত্র -১

তুলনামূলক প্রজনন হার ( জনগোষ্ঠীর ধর্ম অনুসারে ) 

 

 

বর্তমান আলোচনায় প্রজনন হার  বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট প্রসঙ্গ নিয়ে আসার কারণ, যদি অনুপ্রবেশের বিষয়টিকে পৃথক করে দেখি, তাহলে রাজ্যের মধ্যে স্বীকৃত নাগরিক মুসলমান জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে, সেই বিশ্বাসটিকে প্রজনন হার দিয়ে সুনিশ্চিতভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না  (অন্তত রাউন্ড ৩ থেকে রাজ্যের মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যেও প্রজনন হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে)। সেটি এই প্রতিবেদনের রেখাচিত্র – ১ দেখলে বোঝা যায়।  টোট্যাল ফার্টিলিটি রেট সংক্রান্ত  তথ্য সবই National Family Health Survey ( NHFS – Round ) হতে সংগৃহীত এবং নিখাদ সরকারী তথ্য। এই তথ্যগুলো থেকে অন্তত একটা বিষয় সামনে আসছে যে অন্তত বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ব্যাপী মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যেও প্রজনন হার উল্লেখযোগ্যভাবে পড়তির দিকে, অর্থাৎ ২০১১ এর সেনসাসের পর থেকে ‘জন্মহারের জন্য হু হু করে মুসলমান বেড়ে যাচ্ছে’, তথ্য  সেই পার্সেপশন কে সমর্থন করছে না।

এবারে মূল আলোচনায় আসি। “এই রাজ্যে ওপার বাংলা থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীতে ভরে যাচ্ছে, সংখ্যাটা লক্ষ লক্ষ ছাড়িয়ে কোটি কোটি”।  এই বিশ্বাসটা ছড়ানো হচ্ছে। তাহলে তো সেটাও সংখ্যা  দিয়ে নির্ধারণ করতে হবে। এই অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে হিন্দুও থাকতে পারেন আবার মুসলমানও থাকতে পারেন। এই হিসাব বহির্ভূত অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে কাদের এখানে রাখব আর কাদের বিদায় দেব, সেই তর্কে না ঢুকে এটা বলা যায়, অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত হোক আগে।

কিন্তু তার পদ্ধতি?

রাজ্যের জন্য অনুপ্রবেশের সমস্যা সত্যি কতটা উদ্বেগের সেটা বোঝা প্রয়োজন। সেটা বোঝার একমাত্র উপায় জনগণনার দিকে তাকানো। অনুপ্রবেশের হার যদি খুব বেশি হয় তাহলে জনগণনায় সেটা ধরা পড়বে। কিন্তু কিভাবে? জনসংখ্যা তো জন্মহার মৃত্যুহারের থেকে বেশী হলেই বাড়ে। তার মধ্যে কোনটা অনুপ্রবেশের জন্য আর কোনটা নয় সেটা বোঝা যাবে কি করে? একটা সাধারণ ধারণা হল  পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ ঘটছে। সেটা যদি সত্যি হয় তাহলে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের থেকে অনেক বেশী হবে।

সেটা বোঝার জন্য আমরা রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার থেকে ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বাদ দিয়ে একটি নতুন রেখচিত্র তৈরি করতে পারি। সেই রেখচিত্রের আনুভূমিক ‘শূন্য’ বা Zero অবস্থানে থাকবে জাতীয় গড়।  জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার  যদি শূন্যর থেকে বেশী হয় তাহলে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা বেশী, শূন্যর থেকে যদি কম হয় অর্থাৎ রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জাতীয় হারের থেকে কম হয়, তাহলে অনুপ্রবেশ ঘটছে না, বা ঘটলে তা খুব উল্লেখযোগ্য নয়। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি আমরা আসাম আর গুজরাটের জন্যও যদি  একই ভাবে রেখচিত্রটি তৈরি করি ( আসাম, কারণ জাতীয় নাগরিক পঞ্জির দাবি উঠেছিল আসাম থেকেই এবং তার পেছনেও ছিল অনুপ্রবেশের ভয়। আর গুজরাট কারণ গুজরাটে অনুপ্রবেশ হচ্ছে এরকম দাবী কেউ কখনো করে নি) এবং এই রেখচিত্রতে জাতীয় গড় কে zero অবস্থানে রেখে যদি একটানা ১৯৩১ থেকে ২০১১ অবধি ( যে বছরগুলিতে সেনসাস হয়েছিল ) এই রাজ্যগুলির বৃদ্ধির হার বসাই তাহলে দেখা যাবে অনেকের  বিশ্বাসের উলটো একটা চিত্র।  (এই রেখাচিত্রের সব তথ্যই এসেছে ভারতীয় জনগণনার ওয়েবসাইট থেকে) ।

যদি আপেক্ষিক বৃদ্ধির হার শূন্যের ওপরে থাকে তাহলে রাজ্যগুলির জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জাতীয় হারের থেকে বেশি আর যদি তা শূন্যের কম হয় তাহলে রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জাতীয় হারের থেকে কম। যদি খুব আশঙ্কাজনক হারে অনুপ্রবেশ হয় তাহলে সেই রাজ্যের জনসংখ্যা জাতীয় হারের থেকে অনেক বেশি বাড়ার কথা। যদিও উল্টোটা সত্যি নাও হতে পারে, জনসংখ্যা বাড়লেই তা যে অনুপ্রবেশের জন্যই তা বলা যায় না। এই গ্রাফ বা রেখাচিত্র থেকে জানা যাবে, ১৯৪১ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত তিনটি রাজ্যের জনসংখ্যা বেড়েছে জাতীয় হারের থেকে বেশী হারে। গুজরাটের জনসংখ্যাও বেড়েছে, কিন্তু আসাম আর পশ্চিমবঙ্গের থেকে কম হারে। কিন্তু এই যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি তা কী সত্যি অনুপ্রবেশের পরিসংখ্যানকে ধারণ করে? কারণ গুজরাটের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে যদি আমরা স্বাভাবিক বলে ধরে নি তাহলে নানান স্বাভাবিক কারণেও রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জাতীয় হারের থেকে বেশী হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী আগমনের দুটি বড় পর্যায় ছিলভারতের স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। ভারতের স্বাধীনতা লাভের পরে পরেই হয় ১৯৫১’র জনগণনা। সেখানে আসামে জাতীয় হারের চেয়ে বেশী হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটলেও (১৯.৯%), পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা বৃদ্ধি কিন্তু জাতীয় বৃদ্ধির (১৩.৩%) সঙ্গে প্রায় সমানই ছিল। এই বছর গুজরাটের জনসংখ্যা বৃদ্ধি হারও (১৮.৬৯%) অনেকটাই বেশী ছিল জাতীয় বৃদ্ধি হারের তুলনায়। এক্ষেত্রে কিন্তু গণনা প্রক্রিয়ার সমস্যার সম্ভাবনা পুরোটা উড়িয়ে দেওয়া যায় না যেহেতু নব্য স্বাধীন একটি দেশে জনগণনার মত একটি বিশাল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা খুব সহজ নয়। তাই আমরা ১৯৩১, ১৯৪১ ( ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থায় থাকাকালীন ) এবং ১৯৫১ ( নব্য স্বাধীন দেশ ) এই তিনটি পর্বের সেনসাসের হিসাবকে আমাদের আলোচনা হতে বাদ দিতে পারি। এই সম্ভাবনার স্বপক্ষে একটি অপ্রত্যক্ষ প্রমাণ হল ১৯৬১ সালের জনগণনায় পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার বৃদ্ধি হার (৩২.৮%) জাতীয় হারের (২১.৫%) থেকে অনেকটাই বেশী। ১৯৬১ র জনগণনায় আসামের বৃদ্ধি হারও ছিল অনেকটা বেশী (৩৫%)। এমনকি গুজরাটের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আসাম বা বাংলার মত না হলে জাতীয় হারের থেকে বেশী ছিল (২৭%)। একই ভাবে আমরা যদি ১৯৭১ এর জনগণনা দেখি তাহলেও দেখব আসামের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার (৩৫%) জাতীয় হারের (২৫%) থেকে বেশী। পশ্চিমবঙ্গও বেশী (২৭%), কিন্তু আসামের মত অত বেশী নয়। সুতরাং, শরণার্থী (নাকি অনুপ্রবেশকারী?) আগমনের এই দ্বিতীয় পর্যায়েও জনসংখ্যাতে তার একটা ছাপ পাওয়া যাছে। এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত তা কেউই বলবে না, কিন্তু অনুপ্রবেশ পরিমাপের এর থেকে তথ্যভিত্তিক, বস্তুনিষ্ঠ উপায় আর নেই। যাঁরা অনুপ্রবেশের জুজু দেখাচ্ছেন তাঁদের কাছে কিন্তু আদৌ কোন তথ্য নেই, পুরোটাই কিছু ধারণা। ওই যে আগেই লিখেছি, আতঙ্ক একটা রাজনৈতিক অস্ত্র। এখন আমরা যদি সময় সরণীতে আরও এগিয়ে আসি তাহলে দেখব ১৯৮১ এর সেনসাসে আসাম আর পশ্চিমবাংলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জাতীয় হারের থেকে কম, ১৯৯১ এর সেনসাসে জাতীয় হারের থেকে সামান্য বৃদ্ধি  এবং শেষ দুটি জনগণনাতে অর্থাৎ ২০০১ ও ২০১১ এর সেনসাসে  পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার   জাতীয়  হারের থেকে বেশ কমেছে বরং এই পর্বে গুজরাটের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জাতীয় হারের থেকে বেশী। গুজরাট নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হলে আরো বিশ্লেষণ দরকার, তার নানা কারণ থাকতে পারে কিন্তু অন্তত দুটি সেনসাস পর্ব ধরলে ( ২০০১ ও ২০১১ ) এই রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সঙ্গে অনুপ্রবেশের গালগল্প খুঁজে পাওয়া দুস্কর!

অনুপ্রবেশ হয় নি বা হচ্ছে না, তা নয়। কিন্তু কতটা? যা ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাতাসে, তার পেছনে যুক্তি কতটা আর কতটাই বা বিশ্বাস?

 

ঋণ ঃ অনির্বাণ মুখোপাধায়, এই সময় পত্রিকার উত্তর সম্পাদকীয়

        Report of NHFS – চারটি রাউন্ড হিসাবে নিয়ে।

        ভারতের জনগণনা পঞ্জী ওয়েবসাইট

        ঘোষ, ২০১৮

        জেমস এবং রানা, ২০২১  

        শ্রীনিবাস এবং কৃতি, ২০২৫

এই আলোচনা আরো কিছুটা চলবে। 

 

 

0 Comments

Post Comment