২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবসে এই পদযাত্রার পরিপূর্ণতা হলো দিল্লির যন্তর মন্তরে। ১০০০ কিলোমিটার পথ ৫৬ দিন ধরে হেঁটে এলেন যাঁরা বহু চোখরাঙানিকে তুচ্ছ করে, সত্য, ন্যায়, অহিংসা, প্রেমের পথ ধরে হেঁটে এলেন তাদের সকলকে কুর্নিশ জানাতে, পাশে থাকতে এসে পৌঁছলাম একবেলার জন্য। গান্ধীর সাথে ১০০০ কিলোমিটার পদযাত্রার অভিজ্ঞতা সত্যিই অন্যরকম। সেই অভিজ্ঞতাই ভাগ করে নিলেন মনীষা বন্দ্যোপাধায়।
গান্ধীর সাথে পথ চলা, এমনই একটি ঘটনা ঘটে গেল প্রায় ৫৬ দিন ধরে। এদেশের ১০০০ কিলোমিটার পথ ধরে বেশ কিছু মানুষ হাঁটলেন বেনারসের রাজঘাট থেকে দিল্লির রাজঘাট পর্যন্ত। দেশের বাইশটি প্রদেশের পদযাত্রী এতে যুক্ত হয়েছিলেন। 'এক কদম গান্ধী কে সাথ' এই ছিল মূল কথা এবং তার সাথে যুক্ত হয়েছিল 'প্যায়ার কি কারওয়া'র কথা।
"আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী এসআইআর" সকালে খবরের কাগজ দেখে চমকে উঠল সুকান্ত। ভদ্রলোক অবিবাহিত। এদেশেই তার জন্ম কিন্তু দু'হাজার দুই সালের ভোটার লিস্টে তার বাবার কিংবা তার নিজের নাম ছিল না। ভদ্রলোকের বাবা বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। তার বাবা দশ বছর আগে মারা গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কি হবে! এসআইআর-এর আতঙ্কে ভদ্রলোক কয়েকদিন ধরেই চিন্তায় ছিলেন এবং শেষ পরিণতি আত্মহত্যা।
রাজপাটে মৌরসী পাট্টা গেড়ে বসার পরে কেনই বা দুধেল গাইদের বিদেশে গচ্ছিত টাকা নিয়ে টানাটানি করা হবে? কখনো কখনো তাঁরা দেশ ছেড়ে বিদেশে যাবেন, সেই বন্দোবস্ত রাখতে হবে বৈকি। তাঁরা তো নির্বাচনী তহবিলে নামে বেনামে টাকা দেন, নির্বাচনী বন্ডও কিনেছেন। তাই এখন কালো টাকাও নেই, কালো টাকার বিদেশ গমনও নেই। কিছুদিন পরে কি আমাদের এটাও জানানো হবে, যে ভারতে বিদেশী বলেই কেউ নেই, কিংবা এই SIR এর পরে যাঁদের বিদেশী বলে বলা হচ্ছে, সেটাও অত্যন্ত নগণ্য?
মনমোহন সিং-চিদাম্বরমদের নকশাল তথা মাওবাদীদের সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গির কথা তো মোদির অজানা নয়। মনমোহন সিং তো বলেই দিয়েছিলেন : নকশালপন্থীরা দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সবচাইতে বড়ো বিপদ (দ্য হিন্দু, নভেম্বর ১৭, ২০২১)। একদা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বর্তমান অমিত শাহের পূর্বসূরী চিদম্বরম তো স্পষ্টতই বলেছিলেন যে দেশের সন্ত্রাসবাদ দমনের চাইতেই বড়ো চালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নকশালপন্থীরা (দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১১)!
আজ ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫। আজ নির্বাচন কমিশন তাঁদের বিশেষ নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়ার ফল প্রকাশ করবে, অর্থাৎ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। আজ থেকে কিন্তু সমস্ত মানুষের অনিশ্চয়তা কেটে যাচ্ছে এমনটা নয়, উল্টে আজ থেকে বহু মানুষের অনিশ্চয়তা আরো বাড়বে। হয়রানি বাড়বে। নিজের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে সরকারের দপ্তরে দপ্তরে ঘুরতে হবে। আরো নতুন নতুন নিয়ম লাগু হবে, গোদী মিডিয়া জুড়ে সান্ধ্যকালীন চর্চার বিষয় হয়ে উঠবে, বাদ যাওয়া মানুষের সংখ্যা, কিন্তু মানুষের হয়রানি নিয়ে কেউ কথা বলবেন কি?
চিকেন প্যাটিসের সাথে শ্রীমদ্ভাগবত গীতার বিরোধটা ঠিক কোথায় তা সত্যিই বোঝা দুষ্কর। খানকয়েক বেয়াড়া প্রশ্ন মাথায় কিলবিল করছে। গীতার যুগে চিকেন প্যাটিস ছিল না। কৃষ্ণ বা অর্জুন মাংস চেটেপুটে খেলেও চিকেন প্যাটিস খাননি। তাই চিকেন প্যাটিস খাওয়া ও বেচা বারণ? বেচুবাবু যে সবকুচ বেচে দেন, তার বেলা? নাকি শুধু গীতাপাঠে মন চিত্ত হয় না? দুর্বলকে ধরে না পেটালে রক্ত ঠিক গরম ও তেজি হয়না, তাই পেটানো, চিকেন প্যাটিসটা উপলক্ষ্য মাত্র? বেয়াড়া প্রশ্নগুলো তবুও পিছু ছাড়েনা।
ইন্টারোগেশান রুমে পাশাপাশি হাতকড়া পরানো অবস্থায় বসানো রয়েছে রাজু আর পলাশকে। চারজন কনস্টেবল ঘরের চার কোণে পাহারায় রয়েছেন। অফিসার রাত্রি গাঙ্গুলী এসে তাদের উল্টোদিকের চেয়ারে বসে হাতের ফাইলটা সশব্দে টেবিলে রাখলেন। ঘরের চারিদিকে আলো নেই, ওই টেবিলের ওপর শুধু জোরালো এক আলো জ্বলছে আর রাত্রির ঠিক পেছনে আরেকটা স্ট্যান্ড লাইট।
রামদা হাতে নিয়ে গুলঞ্চ দৌড় দিলো।সচরাচর কেউ বাধা তাকে দেয় না। গুলঞ্চর মা জানে সে কোথায় গেলো আর একথাও জানে যে সে রামদা দিয়ে কেবল ভয়ই দেখাতে পারে কাজের-কাজ কিচ্ছু না- সুতরাং গুলঞ্চর মা এই দৌড়কে অগ্রাহ্য করে ঘরের কোণ থেকে মাটির কলসি কাঁখে বেরিয়ে পড়লো দক্ষিণ পাড়ার সাবমারসিবলের দিকে।
আগামী সেনসাস শুরু হওয়ার আগেই আমরা ১৬ বছর পিছিয়ে যাচ্ছি মাইগ্রেশনের প্রকৃত তথ্য থেকে। এই ১৬ বছরের ফাঁকে পরিযায়ী নির্মাণ শ্রমিক শহর মুম্বাই গড়ে তুলেছে, বাস করছে সেখানে আর তার তথ্য রয়ে গেছে বিহারে, উত্তরপ্রদেশের গ্রামে। রাজস্থানের জরি শিল্পে বা হরিয়ানার কারখানায় যে শ্রমিক ঘাম ঝরাচ্ছে সে সংখ্যায় রয়ে গেছে মুর্শিদাবাদ বা ওড়িশার গ্রামে।
শ্রমিক-কৃষক জনতার জঙ্গী আন্দোলন যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসার পর ক্রমশ উত্তাল হয়ে উঠলে ফ্রন্ট নেতৃত্ব তাকে আইনি ও সাংবিধানিক সীমার মধ্যে বেঁধে রাখতে মনোযোগ দিল, যদিও তেভাগার মতো এই সময়েও কৃষক আন্দোলন পার্টির বেঁধে দেওয়া গন্ডি ছাপিয়ে গেল, লালঝাণ্ডা পুঁতে ভূস্বামীদের জমিদখল নিত্যকার ঘটনা হয়ে উঠল, জোতদার-ভিত্তিক দল বাংলা কংগ্রেসের পক্ষে যা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। আজ তৃতীয় পর্ব গ্রামবাংলার রাজনীতি। আগের লেখার সূত্রগুলোও থাকলো এই লেখারই মধ্যে।
গ্রামবাংলার রাজনৈতিক জীবনে সংগঠিত রাজনীতির প্রভাব যে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছিল সেই ১৯২০-৩০-এর দশক থেকেই, তার যথেষ্ট প্রমাণ কৃষক আন্দোলনের গবেষকদের লেখা থেকে পাওয়া যায়। ‘সংগঠিত রাজনীতি’ বলতে কি বোঝায়? এই সমস্ত কিছু বোঝার চেষ্টায় গ্রামবাংলার রাজনীতি (দ্বিতীয় অংশ) এই লেখাটি। আগের লেখার সূত্রও এই লেখার প্রথমেই থাকলো।
পশ্চিমবঙ্গের নিচুতলার মানুষের মধ্যে সংসদীয় দলগুলোর প্রভাব-প্রতিপত্তি ও সংগঠন সম্ভবত সারা ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এরাজ্যের গ্রামাঞ্চলে পার্টি-রাজনীতির প্রভাব কতটা গভীর তার প্রমাণ পাওয়া যায় ১৯৯৮-পরবর্তী কয়েক বছরের রক্তক্ষয়ী গ্রাম দখলের সংঘর্ষে যা পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা-কেশপুর থেকে শুরু হয়ে বিস্তীর্ণ গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। গ্রামবাংলার রাজনীতি নিয়ে চার পর্বের লেখার এটি প্রথম পর্ব।
গণহত্যার ফুলকপি চাষের ইতিহাসের সাথে অনেকেই পরিচিত হয়েছেন এ বছরের (২০২৫) মে মাসে। যখন অসংসদীয়, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মীদের গণহত্যার মধ্যেই সাধারণ সম্পাদককে হত্যা করা হল। তখন কুখ্যাত গণহত্যাকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মিম হাজির হল, হাসি মুখে ফুলকপি হাতে। ফুলকপির তলায় লেখা ছিল, 'রেস্ট ইন পিস নকশালিজম'। নকশাল রাজনীতির সংসদীয় ধারার অন্যতম প্রধান শক্তি সিপিআই(এমএল)(লিবারেশন) বিবৃতি দিয়ে সমালোচনা করেছিল।
আগামী সেনসাস শুরু হওয়ার আগেই আমরা ১৬ বছর পিছিয়ে যাচ্ছি মাইগ্রেশনের প্রকৃত তথ্য থেকে। এই ১৬ বছরের ফাঁকে পরিযায়ী নির্মাণ শ্রমিক শহর মুম্বাই গড়ে তুলেছে, বাস করছে সেখানে আর তার তথ্য রয়ে গেছে বিহারে, উত্তরপ্রদেশের গ্রামে। রাজস্থানের জরি শিল্পে বা হরিয়ানার কারখানায় যে শ্রমিক ঘাম ঝরাচ্ছে সে সংখ্যায় রয়ে গেছে মুর্শিদাবাদ বা ওড়িশার গ্রামে।
রামদা হাতে নিয়ে গুলঞ্চ দৌড় দিলো।সচরাচর কেউ বাধা তাকে দেয় না। গুলঞ্চর মা জানে সে কোথায় গেলো আর একথাও জানে যে সে রামদা দিয়ে কেবল ভয়ই দেখাতে পারে কাজের-কাজ কিচ্ছু না- সুতরাং গুলঞ্চর মা এই দৌড়কে অগ্রাহ্য করে ঘরের কোণ থেকে মাটির কলসি কাঁখে বেরিয়ে পড়লো দক্ষিণ পাড়ার সাবমারসিবলের দিকে।